ছড়াঃ হোমিদাদা – সুজাতা চ্যাটার্জীঃউত্তরাধিকারঃ ওয়েব সাহিত্য পুরস্কার ২০১৭
হোমিদাদা
সুজাতা চ্যাটার্জী
হাবুলের সেজকাকা গিয়েছিল জাপানে,
ভালো এক নামকরা রোবটের দোকানে।
সেইখানে হাতে পেয়ে বহু কাড়াকাড়িতে,
‘হোমি’টাকে নিয়ে আসে নিজেদের বাড়িতে।
হাবুলের ‘হোমিদাদা’ চেহারাটা মস্ত,
সারাদিন কাজ নিয়ে বড়ো বেশি ব্যস্ত!
মুখখানা হাসি হাসি, কিছুতেই রাগে না
সারাদিন জেগে থাকে, ঘুমে চোখ লাগে না।
ঝেড়েঝুড়ে সাফ করে ধুলোটুকু দ্যাখে যেই,
জামাকাচা, ঘরমোছা, কোনও কাজে মানা নেই।
বাঙালির রান্নাটা ছিল না তো জানা তার,
সেটাও নিয়েছে শিখে, বাদ নেই কিছু আর।
একটাই অসুবিধে, সেটা হল ভাষাতেই
হোমিদাদা জাপানি তো, বাংলাটা জানা নেই!
মেজমাসি বলেছিল, “জল আনো ফুটিয়ে,”
ছুঁচ হাতে হোমিদাদা, মারে সবে ছুটিয়ে!
দাদু নাকি বলেছিল, ‘জুতোজোড়া আন তো,”
হোমিদাদা আঠা ঢেলে, জুতো জুড়ে ক্লান্ত।
কাল নাকি ছোটোপিসি বলেছিল বিকেলে,
“আটাখানা মেখে ফ্যাল, রুটি খাবে সকলে।”
তারপরে হই হই, ভূত ভূত চিৎকার,
লোকজন ছুটোছুটি, বাড়িঘর তোলপাড়!
ছুটে এসে দেখে পিসি বলে, “হোমি, হায় হায়!”
হোমিদাদা বসে আছে, আটা মেখে সারা গায়!
বকুনি যে খায় কত, তার কোনও ঠিক নেই
হোমিদাদা চুপ থাকে, মুখে তার হাসি সেই।
অলঙ্করণঃ সপ্তর্ষি দে