অভিবাদন-আলেকজান্দ্র কুপ্রিন
লেখক: আলেকজান্দ্র কুপ্রিন, বাংলা অনুবাদ – সোনালী সেনগুপ্ত
শিল্পী: দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য্য (চিত্রচোর)
নতুন কল্পান্তের দ্বিতীয় শতক শেষ হবে আর খানিক বাদেই, মাত্র পনেরো মিনিট বাকি। পনেরো মিনিট পরেই, মাস দিন ঘন্টা মিলিয়ে পৃথিবীতে উদযাপিত হতে চলেছে জার্মানির আত্মসমর্পণের সেই বিশেষ দিনটি। এই দিনেই জাতীয়তাবাদ আঁকড়ে থাকা শেষ রক্ষণশীল দেশটি, তার উগ্র দেশীয় সত্তা বিসর্জন দিয়ে যোগ দিয়েছিল স্বাধীন নৈরাজ্যবাদী সমিতিতে। খ্রীষ্টীয় ক্যালেন্ডারের হিসেবে সময়্টা ২৯০৬ সালের শেষের দিক।
নতুন করে দ্বিতীয় শতাব্দীতে পা দেবে পৃথিবী। দুশো বর্ষপূর্তি সবচেয়ে বড় করে উদযাপন হচ্ছে উত্তর ও দক্ষিণমেরুতে। ওখানেই রয়েছে তড়িচ্চুম্বকীয় সঙ্ঘের মেন স্টেশন। গত তিরিশ বছর ধরে হাজার হাজার টেকনিশিয়ান, ইঞ্জিনিয়ার, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, গণিতজ্ঞ, স্থপতি, আরো কত বিশেষজ্ঞরা নিঃস্বার্থ, নিরলস পরিশ্রমে শেষ অবধি সম্পূর্ণ রূপ দিয়েছেন দ্বিতীয় শতাব্দীর সবচেয়ে উত্তেজক, উজ্জ্বল, সাহসী পরিকল্পনাটিকে।
পৃথিবীকে পরিণত করা হয়েছে একটি মস্ত বড় তড়িৎচুম্বকীয় ইন্ডাকশন কয়েলে। একটা প্রায় ৩০০ কোটি মাইল দৈর্ঘ্যের ইন্সুলেটেড স্টীলের তার পৃথিবীকে ঘিরে জড়ানো হয়েছে। দুই মেরুতে তৈরি হয়েছে অকল্পনীয় শক্তিসম্পন্ন ইলেক্ট্রোটার্মিনাল, যার থেকে অসংখ্য বিদ্যুৎ সংযোগ ছুটে গেছে পৃথিবীর দূর থেকে দূরতম প্রান্তে। এই উচ্চাকাঙ্খী আশ্চর্য প্রজেক্টের উপর শুধু পৃথিবী নয়, প্রতিবেশী গ্রহের মানুষদেরও ছিল তীক্ষ্ণ দৃষ্টি, সংশয়, সন্দেহ এবং আতঙ্কও মিশে ছিল সেই দৃষ্টিতে। চলতি বছর শেষ হওয়ার সাথে সাথে সংশয়েরও অন্ত ঘটেছে। তড়িৎচুম্বকীয় গবেষণাসমিতির এ এক বিরাট জয়। অবশেষে পৃথিবীর অন্তহীন চৌম্বক শক্তিকে কাজে লাগিয়ে কলকারখানা, কৃষিযন্ত্র, রেল, জাহাজ চলতে শুরু করেছে, সমস্ত রাস্তা ও বাড়ির আলো জ্বলেছে, তাপ সরবরাহ সম্ভব হয়েছে। ফুরিয়েছে কয়লার প্রয়োজন, যদিও খনিজ শক্তির সম্ভার ফুরিয়েছিল তার অনেক আগেই। পৃথিবীর হাওয়া আর দূষিত হচ্ছে না কালো ধোঁয়াতে, ফুল, ঘাস, গাছ, পৃথিবীর সত্যিকারের সম্পদ যা, তা আবার পেয়েছে দীর্ঘজীবনের আশ্বাস। কৃষিক্ষেত্রে এসেছে বিপ্লব, শস্য উৎপাদন বেড়েছে চারগুণ।
উত্তরমেরু কার্যালয়ের একজন ইঞ্জিনিয়ার, যাঁকে এই অনুষ্ঠানের চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়েছে, উঠে দাঁড়িয়ে সমবেত জনতার উদ্দেশে তুলে ধরলেন তাঁর পানীয়ের গ্লাস, অভিবাদন জানালেন। উচ্ছসিত কলরব স্তব্ধ হল। চেয়ারম্যান বলতে শুরু করলেন,
প্রিয় কমরেডগণ! আপনাদের অনুমতি নিয়ে এবার আমি সংযোগ স্থাপন করব দক্ষিণ মেরু স্টেশনের সাথে। এইমাত্র ওঁদের পাঠানো সংকেত আমরা পেয়েছি, ওঁরা প্রস্তুত।
সভাঘরটি দৈর্ঘ্যে প্রস্থে বিরাট। শ্বেতপাথর, কাচ আর ঝকঝকে ইস্পাতে গড়া অনবদ্য একটি স্থাপত্যের নিদর্শন, দুর্লভ সব ফুল আর সজীব সতেজ গাছে সাজানো। চট করে মনে হয় সভাগৃহ নয়, যেন একটি বাগান। বাইরে দীর্ঘ মেরুরাত্রি, কিন্তু সঞ্চিত বিদ্যুৎশক্তিতে সূর্যালোকের রশ্মির মতই ঝলমল করছে ঘর। আলোকিত হয়ে উঠেছে সবুজ গাছ্গুলো, টেবিল, প্রায় হাজার জন পুরুষ ও নারীর মুখ, তন্বী সুগঠিত স্তম্ভগুলো যা ধরে রেখেছে অপূর্ব সুন্দর সিলিং, হাতে আঁকা পরম সুন্দর ছবি ও মূর্তিগুলো। সভাগৃহের তিনটে দেওয়াল স্বচ্ছ, কিন্তু চার নম্বর দেওয়াল, যার দিকে পিছন ফিরে এই মুহূর্তে চেয়ারম্যান দাঁড়িয়ে রয়েছেন, তার সবটাই জুড়ে রয়েছে ভঙ্গুর, উজ্জ্বল কাঁচের ঝকঝকে আয়তাকার টেলিস্ক্রিন।
সভার সম্মতিক্রমে চেয়ারম্যান এবার আলতো করে স্পর্শ করলেন টেবিলের উপরের কন্ট্রোল সুইচটি। সঙ্গে সঙ্গেই চোখ ধাঁধানো আলোয় ঝলসে উঠল স্ক্রিন। তার পরেই ভেসে উঠল এক কাচের প্রাসাদের ছবি, বিস্তৃত, বিরাট, সুন্দর, আর তার সঙ্গে অজস্র হাসিখুশি, স্বাস্থ্যবান মানুষদের মুখচ্ছবি। হালকা উজ্জ্বল রঙের পোশাকে সজ্জিত মানুষগুলো যদিও এই মেরু থেকে প্রায় তেরো হাজার মাইল দূরে, তবুও এপারে অনেকেই চিনতে পারছিল ওপারের অনেককেই। পরিচিতির হাসিতে ভরা মুখে, পানীয়ের গ্লাস তুলে ধরে সভাঘরের অনেকেই ওদের অভিবাদন জানাচ্ছিল। যদিও উচ্ছ্বসিত আনন্দিত কলরোলের ভিতরে কেউই অন্যপ্রান্তের বন্ধু ও প্রিয়জনেদের কথা শুনতে পাচ্ছিল না স্পষ্ট।
চেয়ারম্যান আবার উঠে দাঁড়ালেন। তাঁর কথা শুরু হতেই চুপ করে গেলেন দুপ্রান্তের বন্ধু ও সহকর্মীরা। চেয়ারম্যান বলতে শুরু করলেন,
আমার প্রিয় ভাইবোনেরা! আমার কাম্য সুন্দরী নারীরা! আমার অতীতের ভালোবাসার পাত্রীরা, যাঁদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ! আপনাদের সবার মনোযোগ প্রার্থনা করি! জয় হোক পৃথিবীর বুকে একমাত্র ঈশ্বর – মানুষের। মানুষের উদ্দেশে, তার অতুলনীয় শারীরিক সম্পদ, তার মৃত্যুহীন মস্তিষ্কের উদ্দেশে উৎসর্গিত হোক আমাদের শ্রদ্ধা ও ভালবাসা।
আজ আপনাদের দেখে আমার হৃদয় এক তীব্র আনন্দে ও ভালোবাসায় ভরে যাচ্ছে – ভরে যাচ্ছে এই সাহসী, গর্বিত, সমমর্যাদান্বিত, আনন্দিত মানুষদের দেখে! আমাদের প্রয়োজন নেই মনকে নিয়ন্ত্রণ করার, আমাদের প্রয়োজন নেই জৈবিক কামনা বাসনাকে অবরুদ্ধ করে রাখার। আমরা জানিনা পরাধীনতা, ক্ষমতার প্রদর্শন, হিংসা, বৈর, দ্বেষ, ছলচতুরির জায়গা নেই আমাদের জীবনে। প্রতিদিন আমাদের সামনে উদ্ঘাটিত হচ্ছে পৃথিবীর অসংখ্য রহস্য, আর অপার্থিব আনন্দের সাথে আমরা উপভোগ করছি জ্ঞানের অসীম প্রসারের ক্ষমতাকে। এমনকি মৃত্যুও আমাদের জীবনে আর কোনো ভীতি বয়ে আনেনা। জীর্ণ বয়েসের ভারে ন্যুব্জ হয়ে নয়, চোখে ভয় নিয়ে নয়, ঠোঁটে অনুযোগ অভিশাপ নিয়ে নয়, জীবনকে আমরা ছেড়ে যাই পরিতৃপ্ত ক্লান্ত পথিকের মতো, যার যাত্রা শেষ হল ঠোঁটে স্বর্গীয় হাসি নিয়ে।
বন্ধুরা, হয়তো আমি বহুদিনের জানা কথার পুনরাবৃত্তি করছি? কিন্তু আমি নিরুপায়। আজ সকালে আমি একটা বই পড়ছিলাম, ভয়ঙ্কর ও অসাধারণ একটা বই, বিংশ শতাব্দীর বিপ্লবের ইতিহাস। ভয়ঙ্কর হলেও বইটি নামিয়ে রাখা সম্ভব ছিল না।
মাঝে মাঝে এই ভেবে অবাক বোধ করছিলাম যে আমি ইতিহাস পড়ছি, না কি এ কোন রূপকথা? আমাদের পিতৃপুরুষের জীবন, মাত্র নয় শতাব্দী আগে, এমনই অসম্ভব, বীভৎস আর অযৌক্তিক মনে হচ্ছিল। পঙ্কিল, দূষিত, ব্যাধিগ্রস্ত, কাপুরুষ – তখনকার মানুষেরা যেন খাঁচায় আবদ্ধ কোনো ঘৃণ্য জীবেদের মতো ছিল। কেউ কারোর থেকে চুরি করতো এক টুকরো রুটি, এবং তা লুকিয়ে রাখতো এমন কোনো অন্ধকার কোণে যেন তৃতীয় কোনো ব্যক্তি তা দেখতে না পায়। একে অন্যকে খাদ্য, বাসস্থান, ভূমি, বাতাস ও জল থেকে তারা বঞ্চিত করতো। কামুক ও লোভী মানুষের দল, ধর্মান্ধ, প্রতারক, চোর, অত্যাচারীদের সাহয্যে এক্দল মদ্যপ ক্রীতদাসদের লেলিয়ে দিত আরেকদল কম্পিত মূর্খের বিরুদ্ধে। তারা বেঁচে থাকত সামাজিক বিকৃতির পচতে থাকা ঘায়ের উপর, পরজীবীর মতো। এই বিরাট সুন্দর সজীব পৃথিবী তাদের কাছে যেন অন্ধকূপের মতো সীমাবদ্ধ, কবরের মতো শ্বাসরুদ্ধকারী এক স্থান ছিল।
কিন্তু, এই ভারবাহী পশুদলের মধ্যেই একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছিলেন বীর মানুষেরা, যাঁরা আর এই অবস্থা সহ্য করতে প্রস্তুত ছিলেন না। এই দুর্নীতি গ্রস্ত সমাজ ও সময়ে কি করে তাঁরা জন্মেছিলেন তা যেন সমস্ত বোধের অতীত। প্রতিটি রাস্তার মোড়ে তাঁরা সেদিন স্বাধীনতার জয়ধ্বনি তুলেছিলেন। সেই রক্তাক্ত অন্ধ সময়ে যখন এমনকি নিজের ঘরও নিরাপদ আশ্রয় দিতে পারতো না, যখন অত্যাচার, খুন, জুলুম রাজকীয় পুরস্কার পেত, এই বীর মানুষেরা নির্ভয়ে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন তাঁদের উন্মাদ ঘোষণা : অত্যাচারীর নিপাত চাই! তাঁদের নিষ্ঠায়, আবেগে, রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল পতাকার বেদী। কারার দীর্ঘ অন্ধকারে তাঁরা পাগল হয়ে গেছেন কেউ, কেউ মরেছেন ফাঁসিকাঠে কিংবা ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে। স্বেচ্ছায় মানুষের ভবিষ্যতের জন্য তাঁরা প্রাণ দিয়েছেন, বিসর্জন করেছেন জীবনের অন্যান্য সমস্ত আনন্দ।
বন্ধুরা! আপনারা কি দেখতে পাচ্ছেন না আমাদের আলোকিত বর্তমান আর ভয়ঙ্কর অতীতের মাঝখানে সহস্র মৃতদেহের সেতু? সেই রক্তের নদীর প্রবাহ কি অনুভব করতে পারছেন, যা সমগ্র মানবজাতিকে এনে মিলিয়েছে আজকের আনন্দের সাগরে?
হে নামহীন, মূক বীর শহীদেরা! তোমাদের স্মৃতি অমর হোক। যখন তোমরা আসন্ন মৃত্যুর সামনে দাঁড়িয়েছ, তোমাদের সুদূরপ্রসারী দৃষ্টি, দূর ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে হেসে উঠেছে। তোমরা আমাদের গঠন করেছো, ধারণ করেছো, মুক্ত করেছো, দিয়েছো সাহস ও শক্তি – আর সেই চরম মুহূর্তে দিয়েছো তোমাদের আশীর্বাদ, ভবিষ্যতের মানবজাতিকে।
বন্ধুরা! আসুন আমরা সকলে, স্তব্ধতায়, অনুচ্চারিত শ্রদ্ধায় স্মরণ করি সেই শহীদদের। আসুন অনুভব করি বহুযুগের ওপার থেকে তাঁদের শান্তিময়, কল্যাণকারী দৃষ্টি কেমন ছুঁয়ে যাচ্ছে আমাদের।
সকলেই স্তব্ধ।
হঠাৎ, বক্তার পাশেই বসে থাকা এক অপূর্ব সুন্দরী নারী তাঁর বুকে মাথা রাখলেন, কেঁদে ফেললেন নিঃশব্দে। তাঁকে কান্নার কারণ জিজ্ঞেস করা হলে, ফিসফিস করে তিনি বললেন :
এই সব কিছুর পরেও – কি প্রবলভাবে আমি চাই ঐ ভয়ঙ্কর দিনগুলোতে ফিরে যেতে, বাঁচতে – ওঁদের পাশে – ঐ বিপ্লবীদের পাশাপাশি দাঁড়িয়ে –
অনুবাদ প্রসঙ্গেঃ
আলেকজান্দ্র কুপ্রিন (Куприн, Александр Иванович) (Kuprin, Alexander Ivanovich) জন্ম ৭ সেপ্টেম্বর, ১৮৭০ রাশিয়া সাম্রাজ্যের পেনজা প্রদেশের নরোভচ্যাট গ্রামে, মৃত্যু: ২৫ আগস্ট ১৯৩৮ লেনিনগ্রাদ-এ। তিনি চেখভ, গোর্কি ও বুনিনের সমসাময়িক প্রখ্যাত রুশ সাহিত্যিক। প্রথম জীবনে মিলিটারি অফিসার ও সাংবাদিকতাও করেছেন। তাঁকে সমাজতান্ত্রিক বাস্তবতা গোত্রের লেখক বলা হয়। মানুষের আশা, স্বপ্ন, অনাবিল সততার প্রতি শ্রদ্ধা অথচ তাকে ঘিরে থাকা পঙ্কিল বাস্তব আবর্তের দ্বন্দ্ব তাঁর রচনার মূল উপজীব্য। প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই তাঁর সাহিত্যসৃজন।
‘এ টোস্ট’ (A Toast) গল্পটি প্রাকবিপ্লব যুগের রুশ সাহিত্যিকের কলমে ভবিষ্যৎ স্বপ্নের তথা বর্তমানকে মুল্যায়নের এক অনন্য দলিল। ১৯০৬ সালে লেখা গল্পটি প্রথম প্রকাশিত হয় রাশিয়ান সাহিত্যপত্রিকা ‘Signaly’ (‘সংকেত’)-এ। ১৯৮২ তে আর্দিস (Ardis) কর্তৃক প্রকাশিত লেল্যান্ড ফিটজার (Leland Fetzer) অনূদিত, সম্পাদিত Pre-Revolutionary Russian Science Fiction: An Anthology (Seven Utopias and a Dream) সংকলনে কুপ্রিনের ‘লিকুইড সানশাইন’ নভেলেট-এর সাথে এই গল্পটিও অন্তর্ভূক্ত ছিল। সেখান থেকেই বর্তমান অনুবাদটি করা হয়েছে।
সোনালী সেনগুপ্ত: জৈবরসায়ন নিয়ে লুইজিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করেন এবং অবসরে বই পড়েন। বিজ্ঞানের নানা সমসাময়িক খবরাখবর নিয়ে বাংলা লেখালিখিতে উৎসাহী। এটিই প্রথম অনুবাদ প্রচেষ্টা।
কৃতজ্ঞতা: আলেকজান্দ্র কুপ্রিন, আর্দিস প্রকাশনা, লেল্যান্ড ফিটজার
Tags: আলেকজান্দ্র কুপ্রিন, দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য্য, দ্বিতীয় বর্ষ চতুর্থ সংখ্যা, রাশিয়ান অনুবাদ গল্প, সোনালী সেনগুপ্ত