ছিনতাই হল পৃথিবীটা
লেখক: নিরঞ্জন সিংহ
শিল্পী: দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য (চিত্রচোর)
এরকম একটা ভয়াবহ ঘটনা প্ৰকাশ করা উচিৎ হবে কিনা ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম না। কেননা ব্যাপারটা প্ৰকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সারা পৃথিবী জুড়ে যে সাংঘাতিক আতঙ্ক, ভয় আর বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে তাতে সরকারগুলি ব্যর্থ হবে আইন ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে। অবশ্য তার আর কোন দরকার হবে বলে আমি মনে করি না। মানসিক দ্বন্দ্বে কয়েকটা রাত আমার বিনিদ্র কেটেছে। অবশেষে মনস্থির করেছি। যথেষ্ট দেরী হয়ে গেছে, আর দেরী হলে ঘটনাটা হয়তো কাউকে জানাবারও সুযোগ পাব না।
আপনারা জানেন যে গত চারদিন আগে সারা পৃথিবী জুড়ে একটা প্ৰচণ্ড ভূমিকম্প ঘটে গেছে। ঘটনার সূত্রপাত সেই ভূমিকম্পের সময় থেকে। সারা পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা এ–কদিনে পৃথিবীকে কক্ষপথ থেকে বিচ্যুত হতে দেখে নিশ্চয় গালে হাত দিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন। তারা বুঝতে পেরেছেন পৃথিবী আর তার বুকের মানুষ নামের জীবের ভবিষ্যৎ। কিন্তু কি করে এরকম অঘটন ঘটলো সে সম্বন্ধে তারা সম্পূর্ণ অজ্ঞ। সেই গোপন রহস্য জানি একমাত্র আমি। সেই কথা আপনাদের জানাতে আমি বদ্ধ পরিকর। আমার আসল উদ্দেশ্যের কথা জানতে পারলে “ফ্যান্টাস্টিক” সম্পাদক হয়তো এ লেখা প্ৰকাশই করতেন না। তাই সাধারণ মানুষের মুখ চেয়েও নিজের বিবেকের তাড়নায় আমাকে একটু ছোট্ট ছলনার আশ্রয় নিতে হয়েছে। নির্ভেজাল বিজ্ঞান–ভিত্তিক গল্প প্ৰকাশে কোন আপত্তি জানান নি সম্পাদক মশায়।
জানি না শেষ পর্যন্ত এ লেখা আপনাদের হাতে গিয়ে পৌঁছুবে কি না, কেননা তার আগেই হয়তো কোন ভয়ঙ্কর কিছু ঘটে যেতে পারে। কারণ জেনে রাখুন আমাদের পৃথিবী গত চারদিন আগে, ভূমিকম্প শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের মাধ্যাকর্ষণ কাটিয়ে নিজের কক্ষপথ থেকে ছিটকে বেরিয়ে সৌরমণ্ডলের বাইরে ছুটে চলেছে। অবশ্যই নিজের ইচ্ছেয় নয়। একদল বহুদূর নক্ষত্রবাসী পৃথিবীর অভ্যন্তরে কোন নিরাপদ কন্ট্রোলরুমে বসে এই পৃথিবীরূপী মহাকাশযানটিকে চালিত করে নিয়ে চলেছে ওদের নিজেদের গ্রহের উদ্দেশে।
জানি ব্যাপারটা বিশ্বাস করে ওঠা ঠিক এই মুহূকল্পকর্তে আপনাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। অবশ্য তাতে কিছু যায় আসে না। কিছুক্ষণের মধ্যে অথবা কিছুদিনের মধ্যে আমার কথার বাস্তবতা আপনারা বুঝতে পারবেন এই আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে কেন ওরা গোটা পৃথিবীটাকে নিয়ে চলেছে? তার প্রধান কারণ পৃথিবীর ধাতু–সম্পদ ওদের কাছে অত্যন্ত মূল্যবান জিনিস। সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে লোহা, ইস্পাত, তামা, নিকেলের একটা ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে তা নিশ্চয় আপনারা অস্বীকার করতে পারেন না। আমাদের আধুনিক সভ্যতা দাঁড়িয়ে রয়েছে প্রধানতঃ ইস্পাতের উপর। মাঝে মাঝে বিজ্ঞানীরা ইঙ্গিত দিচ্ছেন যে একদিন পৃথিবীর সঞ্চিত লোহ ফুরিয়ে যাবে। অবশ্য এই লোহার হিসেব কষছেন তঁরা পৃথিবীর উপরের স্তরে যে লোহা আছে তারই পরিপ্রেক্ষিতে। কিন্তু পৃথিবীর কেন্দ্ৰে নাকি রয়েছে গলিত লোহা আর নিকেল। সঠিক হিসেব জানলেও তা বের করে এনে কাজে লাগাবার মত প্রযুক্তিগত দক্ষতা আমাদের নেই, এই আমাদের বিজ্ঞানীদের মত। আমাদের না থাকতে পারে; কিন্তু ঐ ভিনগ্রহবাসীদের নিশ্চয় সে প্রযুক্তিগত দক্ষতা আছে।
পৃথিবীর উপরের স্তরের সঞ্চিত লোহ ফুরিয়ে গেলে আমরা যদি আমাদের সভ্যতাকে বঁচিয়ে রাখতে চাই, তাহলে চাঁদ, মঙ্গল বা অন্য গ্ৰহ–উপগ্রহে লোহা খুঁজতে যাব। সেখান থেকে লোহা সংগ্রহ করে মহাকাশযান মারফৎ পৃথিবীতে পাঠাব। এছাড়া আরও একটা সহজ পথ আছে। একজন আমেরিকান বিজ্ঞানী বলেছেন মূল্যবান ধাতু–সমৃদ্ধ গ্রহাণুর বুকে পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটিয়ে গ্রহাণুটিকে কক্ষচ্যুত করে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ ক্ষেত্রের মধ্যে টেনে নিয়ে এসে ওটাকে পৃথিবীর কৃত্ৰিম উপগ্ৰহরূপে স্থাপন করা সম্ভব। অল্প খরচে ওই গ্রহাণু থেকে ধাতু–সম্পদ আহরণ করা যেতে পারে। গোটা পৃথিবীকে নিজেদের গ্রহের মাধ্যাকর্ষণ ক্ষেত্রের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার রহস্য আশা করি এবার পরিস্কার!
আপনাদের মনে আরও একটা প্রশ্ন নিশ্চয় উঁকি ঝুঁকি মারছে। ভীনগ্ৰহবাসীরা পৃথিবীর বুকে এলই বা কবে, আর পৃথিবীটাকে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থাই বা করল কখন?
স্কটিশ এ্যাসোসিয়েশন ফর টেকনোলজী ও রীসার্চের সভাপতি এক তরুণ জ্যোতির্বিদ বিলম্বিত বেতার সংকেত নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা নিরীক্ষা করে একটা নক্ষত্রপুঞ্জের জ্যোতিষীয় মানচিত্র তৈরী করেছিলেন। পৃথিবী থেকে ১০৩ আলোকবর্ষ দূরের এপ্সিল্ন্ বোওটিস্ নক্ষত্রপুঞ্জের মানচিত্র ওটা। শুধু তাই নয়, বেতার সংকেত বিশ্লেষণ করে তিনি এই সিদ্ধান্তে এসেছিলেন যে ১২,৬০০ বছর ধরে একটা কৃত্রিম উপগ্রহ আমাদের সৌরমণ্ডলের একটি কক্ষপথে আবর্তিত হয়ে চলেছে। বারে হাজার ছশো বছর আগে? সে তো শেষ তুষার যুগ শেষ হবার কাল। সভ্য–মানুষের তো তখন জন্মই হয় নি এই পৃথিবীতে। তাহলে এই ক্ষুদে কৃত্রিম উপগ্রহটিকে কক্ষপথে স্থাপন করল কারা?
যাঁরা নিয়মিত খবরের কাগজ পড়েন তাঁরা একটা খবরের কথা হয়ত মনে করতে পারবেন। ১৯৭২ সালের ডিসেম্বর মাসে চন্দ্ৰাভিযানের শেষ মহাকাশযান ‘অ্যাপালো–১৭’ চাঁদের কক্ষপথে ঢোকার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে ডঃ স্মিট জানান যে চাঁদের বুকে একটা গিরিখাতের কাছে ওঁরা আলোর ঝলকানি দেখতে পেয়েছেন। একথা শুনে হিউস্টনের সমবেত বিজ্ঞানীরা বিস্ময়ে থ হয়ে গিয়েছিলেন। কোটি কোটি বছর ধরে চাঁদ একটা নিস্ক্রিয় বস্তুরূপে মহাকাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে, হঠাৎ তার বুকে এধরনের আলোর ঝলকানি কোথা থেকে এলো? চাঁদ মৃত উপগ্রহ, সেখানে কোন জীবন্ত আগ্নেয়গিরি নেই। শুধু তাই নয় চাঁদের ভিতরে নেই কোন উত্তপ্ত ধাতব–কেন্দ্ৰ। চাঁদের কেন্দ্ৰ ফাঁপা। সাধারণ মানুষের সামনে এর বেশী আর কোন তথ্য তুলে ধরা হয় নি। কারা চাঁদকে ফাঁপা করল? গিরিখাতের কাছে আলোর ঝলকানি কি কোন ভিনগ্রহীদের মহাকাশ–যানের ব্লাস্ট–অফের ঝলকানি?
মঙ্গল ও বৃহস্পতি গ্রহের মাঝখানে রয়েছে অসংখ্য ছোটবড় গ্রহাণু। এরা নিয়মিত সূর্যকে প্ৰদক্ষিণ করে চলেছে। বিজ্ঞানীরা বলেন একদিন ওই কক্ষপথে একটা পূর্ণাঙ্গ গ্রহ ছিল। বোড্স্ল অবশ্য তাই বলে। বিজ্ঞানীরা আরো মনে করেন যে কোন মহাজাগতিক বিপর্যয়ের ফলে সেই গ্রহটি ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গ্রহাণুপুঞ্জে পরিণত হয়েছে। সেই গ্রহটির চেহারা ও ভর ছিল নাকি প্রায় পৃথিবীরই মত। তারও কেন্দ্ৰে ছিল পৃথিবীর কেন্দ্রের মত গলিত উত্তপ্ত লোহা আর নিকেল। সাত লক্ষ বছর আগে সেই গ্রহটি নাকি ধ্বংস হয়। কি এমন মহাজাগতিক বিপর্যয় ঘটেছিল যে সৌরমণ্ডলের আর কোন গ্রহের ক্ষতি না হয়ে ধাতু সমৃদ্ধ গ্ৰহ ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেল? নাকি সেই অজানা গ্রহটাকে ওরা প্রথম ওদের নক্ষত্ৰলোকের দিকে নিয়ে যেতে চেয়েছিল?
কল্পনা করুন, বহুদূরের নক্ষত্ৰলোক এপ্সিল্ন্ বোওটিস – তার ষষ্ঠ গ্রহবাসীরা সভ্যতার চরম শিখরে। শিক্ষা দীক্ষা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি বিদ্যায় তারা বহু উন্নত। কিন্তু গ্রহে দেখা দিয়েছে ধাতু–সঙ্কট। সুতরাং মহাকাশযান ছুটিল দিকে দিকে, অফুরন্ত ধাতুর সন্ধানে। একটা বিরাট মহাকাশযান একদিন এসে ঢুকল আমাদের সৌরমণ্ডলে। মহাকাশযানে বসেই ওরা প্রতিটি গ্রহের বর্ণালী বিশ্লেষণ করে দেখতে লাগল। অবশেষে ধাতু–সমৃদ্ধ গ্রহের সন্ধান মিলল। মহাকাশযান এসে নামিল সেই নামহীন গ্রহে – কেন্দ্ৰে যার লোহা, নিকেলের অফুরন্ত সম্ভার। একদল কাজে লেগে পড়ল, গ্রহটিকে সূর্যের মাধ্যাকর্ষণ থেকে মুক্ত করে নিজেদের নক্ষত্ৰলোকের দিকে নিয়ে যাওয়া জন্য। অন্যদল বেরিয়ে পড়ল কাছাকাছি অন্য ধাতু–সমৃদ্ধ গ্ৰহ–উপগ্ৰহগুলোকে সরজমিনে জরীপ করার জন্য। চাঁদ আর পৃথিবী হল তাদের প্ৰথম লক্ষ্য।
গণনায় নিশ্চয় কোন ভুলত্রুটি ঘটেছিল, তাই পারমাণবিক বিস্ফোরণে গ্রহটি সূর্যের মাধ্যাকর্ষণ–মুক্ত না হয়ে নিজেই ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেল। ধ্বংস হল ওদের বেস! পৃথিবীতে যারা জরীপের কাজে এসেছিল তারা আটকে পড়ল, কিন্তু হতাশ হল না। সৌরমণ্ডলকে আরো ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করল। নিজেদের গ্রহের সঙ্গে বেতার–যোগাযোগ করে সঠিক পথটা বের করে ফেলল। অবশ্য তাতে সময় লাগল অনেক। কিন্তু আমাদের কাছে যা দীর্ঘ সময়, ওদের কাছে হয়তো তা নয়। এবার এল পৃথিবীর পালা।
পৃথিবীর বুকে মানুষ সৃষ্টি হওয়ার কয়েক লক্ষ বছর আগেই ওরা এসে আস্তানা গেড়েছে পৃথিবীর বুকে। তারপর মানুষের জন্ম হল, তারা উন্নত হল। ওরা বুঝতে পারল দ্রুত একটা বুদ্ধিমান জীবের আবির্ভাব ঘটছে পৃথিবীতে। ওদের সমস্ত কার্যকলাপ যাতে মানুষ বুঝতে না পারে তার সব রকম ব্যবস্থা করল ওরা। এমনকি জেনেটিক, ইঞ্জিনীয়ারীং এর সাহায্যে নিজেদের চেহারাও মানুষের মত করে ফেলল। শুরু করল মানুষের মত জীবন যাত্ৰা। মিশে গেল ওরা পৃথিবীর মানুষের সঙ্গে। ওদের মত উন্নত জীবদের পক্ষে এগুলো কোন ব্যাপারই নয়।
আমাদের বিজ্ঞানীরা কি এসম্বন্ধে কিছু আঁচ করেছিলেন? মিশরের পিরামিড তাই কি তঁদের কাছে ধাঁধার সৃষ্টি করেছে? পেরুর বুকের অদ্ভুত সব চিত্র ভীনগ্রহবাসীদের এয়ার–বেস বলে তাই কি ওঁরা সন্দেহ প্ৰকাশ করছেন? তাই কি আমেরিকার পণ্ডিতরা ‘মায়াদের’ ভাষায় পাঠোদ্ধার করার জন্য পরিশ্রম করে চলেছেন? তাই কি পৃথিবীর দুই বৃহৎ যুযুধান শক্তি কাঁধেধ কাঁধ মিলিয়ে দক্ষিণ মেরুর বরফের রাজ্যে কোন এক অজানা গ্ৰহলোকের চাবিকাঠি হাতড়ে বেড়াচ্ছেন?
কিন্তু আমরা বোধহয় বড় দেরী করে ফেলেছি। যা ঘটার তা ঘটে গেছে। ভীনগ্রহবাসীদের কাজ শেষ। কোন এক শুভ (নাকি অশুভ মুহূর্তে) তারা পৃথিবীর অভ্যন্তরের কন্ট্রোলরুমে বসে সুইচে চাপ দিয়েছে। না এবার আর কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি। পৃথিবী টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে পড়েনি। তার বদলে পৃথিবী থরথর করে কেঁপে উঠেছে প্ৰচণ্ড পারমাণবিক বিস্ফোরণের ফলে, যাকে আমরা ভূমিকম্প বলে ভুল করেছিলাম। নিজের কক্ষপথ থেকে ছিটকে বেরিয়ে সূর্যের মাধ্যাকর্ষণের মায়া কাটিয়ে যখন সে ছুটে চলেছে হয়তো এপ্সিল্ন্ বোওটিস্ নক্ষত্রের উদ্দেশে।
এখনো হয়তো আপনাদের মন সন্দেহের দোলায় দুলছে। জেনে রাখুন পৃথিবীর আবহমণ্ডলে তেজষ্ট্ৰীয়তা বেড়ে গেছে সাংঘাতিক ভাবে। দিনরাত্রির মোট সময়ের পরিমাণ আস্তে আস্তে বাড়তে শুরু করেছে। পৃথিবী যত সূর্যের কাছ থেকে দূরে সরে যাবে ততই সব ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটতে শুরু করবে।
আবহাওয়ার স্তর উৰে যাবে। মহাকাশের উড়ন্ত উল্কার ঝাঁক এসে আছড়ে পড়বে পৃথিবীর বুকে। সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি পুড়িয়ে খাক্ করে দেবে ভূপৃষ্ঠের সমস্ত জীবন। আরো পরে ঠাণ্ডা হতে শুরু করবে পৃথিবী! বরফের স্তর জমতে শুরু করবে নিষ্প্রাণ ভূপৃষ্ঠের উপর। প্রাগৈতিহাসিক ডাইনোসরদের মত আমরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাব!
মঙ্গল পেরিয়ে গ্রহাণুপুঞ্জের রাজ্য ছাড়িয়ে বৃহস্পতির কোল ঘেঁষে ছুটে যাবে আমাদের প্রিয় পৃথিবী। তবে সব দৃশ্য দেখবার জন্য আমরা কেউই হয়তো বেঁচে থাকবো না।
আপনারা হয়তো ভাবছেন আমি কি করে এত কথা জানলাম। আপনাদের শেষ সন্দেহেরও আমি নিরসন করব। গত সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরে একটি অজানা মহাকাশযান ভেঙে পড়ে। সিকিউরিটির তরফ থেকে আমরা সেই মহাকাশযানটিকে উদ্ধার করতে গিয়েছিলাম। সমুদ্রের তলা থেকে মহাকাশযানটির কিছু ভাঙাচোরা অংশ ও কিছু গলিত ধাতুপিণ্ড ছাড়া আর কিছুই উদ্ধার করা সম্ভব হয় নি। না, ভুল বললাম। আমি নিজে একটা ছোট্ট প্লাটিনামের কৌটো খুঁজে পাই। সেই কৌটোর ভিতরে ছিল একটা মাইক্রোটেপ। সেই মাইক্রোটেপটাই হচ্ছে ওদের মাস্টার–প্ল্যানের কপি।
এরপর সব কিছু বিশ্বাস করা না করা আপনাদের অভিরুচি। তবে জেনে রাখুন, মৃত্যু তার কালো থাবা বাড়িয়ে নিঃশব্দে দ্রুত এগিয়ে আসছে।
সম্পাদকের কথাঃ গল্পটি প্রথম প্রকাশ পায় ফ্যান্টাসটিক বার্ষিকী ১৯৮০ সালে। লেখকের অনুমতি নিয়ে গল্পটি কল্পবিশ্বের শারদীয়া সংখ্যায় পুনঃপ্রকাশিত হল। পুনঃপ্রকাশে বানান অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। গল্পটি ওসিয়ার করে সাহায্য করেছেন সন্তু বাগ।
Tags: কল্পবিজ্ঞান গল্প, কল্পবিজ্ঞান গল্প, ছিনতাই হল পৃথিবীটা, দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য (চিত্রচোর), দ্বিতীয় বর্ষ তৃতীয় সংখ্যা, নিরঞ্জন সিংহ, পূজাবার্ষিকী