পুস্তক পরিচয় – ছয়টি ডিটেকটিভ সায়েন্স ফিকশনের খোঁজে
লেখক: কুনাল কর্মকার
শিল্পী: ইন্টারনেট
এই সংখ্যায় আমি আপনাদের ৬ টি ডিটেকটিভ কল্পবিজ্ঞান উপন্যাসের সাথে পরিচয় করাবো।
১) দ্য ডেমোলিশড ম্যান-এ্যাল্ফ্রেড বেস্টার
২৩০১ সালে বন্দুক শুধুই জাদুঘরের দ্রষ্টব্য। টেলেপ্যাথ পুলিশের কড়া নজরদারীতে অপরাধ ঘটার আগেই অপরাধী ধরা পড়ে যায়। এমন আপাত অপরাধবিহীন সমাজে, এক প্রভূত বিত্তবান ব্যক্তি পরিকল্পনা করতে থাকে এক নিখুঁত খুনের।
ধীরে ধীরে উন্মোচিত হতে থাকে একটি ভয়ঙ্কর সারভেলান্স স্টেটের রূপ যেখানে স্বাচ্ছ্যন্দের জন্য মানুষ শৃঙ্খল মেনে নিলেও, হিংসা ও বিদ্রোহের অদম্য ইচ্ছে প্রকাশ পেয়েই যায় ।
১৯৫২ সালে প্রকাশিত উপন্যাসটি, ১৯৫৩ সালের হুগো পুরষ্কার বিজয়ী (হুগোর প্রথম প্রাপক)। লেখাটিকে প্রথম সাইবারপান্ক হিসেবে গণ্য করা হয় ।
এসএফ মাস্টারওয়ার্কের অন্যতম ।
২) কিংডম অফ হীরোস-জে ফিলিপস
এ এমন এক অল্টারনেট দুনিয়ার গল্প যেখানে সাধারন মানুষের হয়ে লড়তে লড়তে একদিন 7 নামক সুপারহিরোর দলই পৃথিবীর রাজা হয়ে যায়, ভয়ঙ্কর তাদের রাজত্ব। সুপার পাওয়ার থাকলেও মৃত্যুর হাত থেকে কিন্তু রেহাই নেই, হঠাৎই খুন হয়ে যেতে থাকে 7-র সদস্যরা;বহু চেষ্টাতেও যখন খুনের কিনারা হয় না,তখন তদন্তের ভার পড়ে বিদ্রোহের অপরাধে কারাবন্দী ডিটেকটিভের ওপর, যে নিজেও চায় অত্যাচারীদের পতন।
৩) দ্য সিটি এন্ড দ্য সিটি-চায়না মেল্ভিল
একই স্পেসে দুটি মহানগরীর সহাবস্থান,প্যারালাল দুনিয়ায়। মজার ব্যাপার হল দুজনই একে অপরকে দেখতে পায়, কিন্তু কিছুতেই একে অপরের অস্তিত্ব স্বীকার করতে চায় না। এমতাবস্থায় বেসজেল শহরের এক মহিলাকে খুন করে অপরাধী তার দেহ ফেলে আসে উল্কুমা শহরে; বাধ্য হয়েই দুই শহরের দুই ডিটেকটিভ জোট বাঁধে তদন্তের স্বার্থে। থ্রিলার ও ওয়ার্ল্ড বিল্ডিং এর অপরূপ সমন্বয় এই উপন্যাসটি আর্থার সি ক্লার্ক পুরস্কার বিজয়ী।
৪) দ্য ইয়িডিস পুলিশমেনস ইউনিয়ন-মাইকেল চাবন
ইহুদী মহানগর শিটকা’তে খুন হয়েছে মাফিয়া ডনের একমাত্র ছেলে, সামনে সাজানো দাবার বোর্ড। তদন্তে ডিটেকটিভ মেন্ডেল স্পীলম্যান ও তার সহকারী বারকো সেমেত্স। অসাধারণ এই নয়্যার উপন্যাসটি একটি অল্টারনেট সময়সারণী বেয়ে চলে যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ষাট বছরের লীজে আলাস্কার একটি অংশ ইহুদিদের দান করার ফলে প্রায় চল্লিশ লক্ষ মানুষ রক্ষা পায় গ্যাস চেম্বার থেকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে ১৯৪৬ এ। ইজরায়েলের জন্ম হলেও আরব লীগের সম্মিলীত শক্তির সামনে সে নিশ্চিহ্ন।
উপন্যাসটি হুগো(২০০৮.), নেবুলা(২০০৯) এবং Sidewise Award for Alternate History(২০০৯) পুরস্কার বিজয়ী।
৫) এ ফিলোসফিক্যাল ইনভেস্টিগেসন-ফিলিপ কার
১৯৯৫ এ প্রকাশিত এই উপন্যাসে বলা হয়েছে ২০১৩ এমন এক লন্ডনের কথা, যেখানে সিরিয়াল খুন প্রায় মহামারীর আকার ধারণ করেছে। সরকার যথেচ্ছভাবে ব্রেন স্ক্যানিং, ডিএনএ ম্যাপিং করছে, আশা কোনওভাবে যদি আগে থেকে খুনিদের সনাক্ত করা যায়। সাফল্য আসে; গবেষণায়, একটি জীনগত মার্কার আবিষ্কৃত হয় যা ‘হয়তো’ বা হিংসাত্মক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়তে পারে এমন মানুষকে সনাক্ত করতে পারে। তৈরি হয় তালিকা। সেই তালিকা ঘটনাচক্রে পৌঁছে যায় উইনজেনস্টাইন নামক এক সিরিয়াল খুনীর হাতে, শুরু হয় হত্যালীলা। তদন্তে নামেন চীফ ইনস্পেক্টর ইসাডোরা।
বার্লিন নয়্যার সিরিজের রচয়িতার এই উপন্যাসটি একটি কাল্ট ক্লাসিক।
৬) টী ফ্রম এ্যান এমটি কাপ-প্যাট ক্যাডিগান
১৯৯৮ সালে প্রকাশিত উপন্যাসটি সাইবারপাঙ্ক ও ডিটেকটিভ জনারের এক সার্থক মিশ্রণ। লেখক একটি সময়ের কথা বলেছেন যখন মানুষ বেঁচে থাকার রসদ খোঁজে ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি খেলার মধ্যে। সবসময় ওয়্যারড অবস্থায় থাকা মানুষের সংখ্যা প্রচুর। এরকম এক যুবকের গলাকাটা মৃতদেহ হঠাৎই আবিষ্কার হয় ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি কক্ষে। তদন্তে নামেন ডিটেকটিভ ডোর- কনস্টান্টিন,দেখেন একইভাবে যুবকটি খেলার মধ্যেও খুন হয়েছেন। তদন্তের স্বার্থে ডোর পাড়ি দেন কৃত্রিম দুনিয়ায়, পৌঁছে যান ভার্চুয়াল নগরী নু ইয়ক এ। দেখেন ঠিক একই ভাবে ওয়্যারড অবস্থায় খুন হচ্ছেন অনেক খেলোয়াড়।
ডোর জড়িয়ে পড়তে থাকেন এক জটিল আবর্তে, ফিকে হয়ে যেতে থাকে বাস্তব আর পরাবাস্তবের সীমানা ।
Tags: কুনাল কর্মকার, গ্রন্থ পরিচিতি, চতুর্থ বর্ষ দ্বিতীয় সংখ্যা, ডিটেকটিভ সায়েন্স ফিকশন
দারুণ লেখা। অনেকগুলো মনে রাখার মতো বইয়ের কথা বলা হয়েছে এই একটি আলোচনায়।
এগুলোর কোনো buy link (যেমন amazon / flipkart) দিলে বা না পাওয়া গেলে পিডিএফ এর লিঙ্ক দিলে মনে হয় আরও বেটার হতো।
pdf er link dewa jabe na. ami dekhchi amazon ba flipkart er link edit kore dewa jay kina. thanks.
দারুণ পরিচয় টি। এর মধ্যে দুটি মাত্র পড়া এবারে বাকি গুলোর খোঁজ করব।