Saturday, November 16, 2024
প্রবন্ধ

প্রফেসর নাটবল্টু চক্র: অমৃতের সন্ধান, না সময়-নষ্ট?

6 thoughts on “প্রফেসর নাটবল্টু চক্র: অমৃতের সন্ধান, না সময়-নষ্ট?

  • দুর্দান্ত চুলচেরা বিশ্লেষণ এবং সাথে ভগবান কি হতে পারতেন, অথচ কি হলেন সেটিকে যুক্তির অতস-কাঁচ দিয়ে খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরা, লাজবাব!

    Reply
  • হীরালালের গল্পটা পড়লে, ইচ্ছে করলে কোন স্তরে যেতে পারত এ সিরিজের গল্পেরা তার একটা হালকা আভাস মেলে। তাহলে কেন প্রতিটি গল্পতে তা নয়? কেন অবহেলার চিহ্ন গায়ে নিয়ে জন্মাল এই জনপ্রিয় সাইফি রূপকথার দল? সম্ভবত, সাহিত্যে সায়েন্টিফিক রিগার, তুলনায় অগভীর বাংলাপাঠকের কাছে কখনই গ্রহনযোগ্য হয় না। সেখানে সামান্যতম গুরুমস্তিষ্কের প্রয়োগ বা স্কুলবুকের বাইরের পড়াশোনার দাবি থাকলে সঙ্গেসঙ্গেই সে লেখাকে “কঠিন”তার তকমা দিয়ে বনবাসে পাঠানোটাই চিরকেলে দস্তুর। হাসি, প্রেম, রাজনীতি ও টি’শপ-সমাজচেতনার বাইরে সাহিত্যকে অন্য গভীরতায় নিয়ে যেতে চাইলে তাকে কঠিনতার তকমা লাগিয়ে তাকে তুলে রাখার ইনস্টিংকট তার মননের গভীরে গাঁথা। এজন্যেই রবীন্দ্রনাথের বহু সিরিয়াস কাজ কম পড়া হয়। ত্রৈলোক্যনাথ বা পরশুরামের হাস্যরসকে নিয়ে (তাত্ত্বিক কিছু কাজ হলেও) জনমানসে সেই হুল্লোড় তৈরি হয় না যা হয় ফেসবুকের একটা হালকা হাসির ওয়েফার জোকে, কিংবা দীর্ঘকাল ধরে সেই জনপ্রিয়তায় থেকে যায় শঙ্কু আর হারিয়ে যায় দিলীপ রায়চৌধুরীর অরিজিনাল কিংবা কুলদারঞ্জনের অনুবাদ সাইফি। হয়ত এই কারণেই সসাঙ্গপাঙ্গ ত্রিদেব এবিসি যখন সেইসব অসামান্য সাইফির জন্ম দিয়ে চলেছে ইংরিজি ভাষায় সে সময়ে বাংলায় লিখতে বসে এইসব রূপকথার জন্ম দিতে হয়েছে শক্তিমান কলমদের। নইলে এ গল্পগুলোও হারিয়ে যেত। একজন লেখকের পক্ষে নিজেকে পাত্রের মাপে এইভাবে বামন বানিয়ে রাখা যন্ত্রণাদায়ক বটে, কিন্তু অস্তিত্ত্বের প্রশ্ন অনেকসময়েই তাঁকে তা করতে বাধ্য করে তোলে। কবজির জোর থাকলেও কমলকুমার বা জগদীশ গুপ্ত বা চিত্ত ঘোষাল হবার মত হবার মত কলজের জোর বেশি লোকের নেই।

    Reply
  • Abhijnan Roychowdhury

    খুব সুন্দর বিশ্লেষণাত্মক রিভিউ। আমি সামান্য যে কটা প্রফেসর নাটবল্টু চক্র পড়েছি, তাতে আমারও একই রকম অনুভূতি।

    Reply
  • Vivek Kundu

    কিছু ব্যতিক্রম বাদে ব্যক্তিগতভাবে অদ্রীশ বর্ধনের মৌলিক লেখা আমাকে সেভাবে টানেনি কোনদিন। এর দুটো কারণ, এক ভাষার আড়ষ্টতা, দ্বিতীয়, অনেক সম্ভাবনাময় লেখার অন্যমার্গে যাত্রা। নাটবল্টু চক্রের ব্যাপারে ঋজুবাবুর সংগে সহমত। সেই তুলনায় ইন্দ্রনাথ রুদ্র অনেকাংশে সফল। কিন্তু বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে প্রনাবচ এবং দীনানা থেকে যাবেন সংগত কারণেই।

    Reply
  • Biswadip Dey

    ঋজুর লেখা নিয়ে এই পোস্ট ও সকলের বক্তব্য দেখে আমারও দু-চার কথা বলতে ইচ্ছা হল। প্রথমেই বলি, কল্পবিশ্বের সম্পাদক মণ্ডলীর লক্ষ্যই ছিল সংখ্যাটিতে অদ্রীশ বর্ধনকে যত রকম ভাবে সম্ভব এক্সপ্লোর করা। তাই ঋজুর এই লেখাটি আমরা ছাপার সিদ্ধান্ত নিই। লেখাটি সম্পর্কে আমাদের মত, ঋজুর লেখাটি অত্যন্ত সুলিখিত । তিনি যা বলতে চেয়েছেন, সেটি স্পষ্ট করে বলতে পেরেছেন। তাই লেখাটির অনেক অংশের সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত না হয়েও আমরা লেখাটি এই সংখ্যায় প্রকাশ করতে সম্মত হই। তা ছাড়া, আগেই বলেছি আমাদের উদ্দেশ্য অদ্রীশ বর্ধনকে এই সংখ্যায় যত রকম ভাবে সম্ভব এক্সপ্লোর করা। এই লেখা একটা অন্য দৃষ্টিকোণের সঙ্গে পাঠককে পরিচয় করিয়ে দেবে, সেই উদ্দেশ্যেই লেখাটি রাখা।
    তবে, একজন সাধারণ পাঠক হিসেবে এই লেখার অনেক বক্তব্যের সঙ্গে আমি একমত নই। সেগুলিও একটু বলতে চাই। প্রথমত, অদ্রীশের নাটবল্টু চক্রের কাণ্ডকারখানা যে ‘উদ্ভট’ হবে, সেটাই কি স্বাভাবিক ছিল না? নামটাই তো লেখকের মনোভাবকে স্পষ্টকরে দেয়। এবং আমার মতে, অদ্রীশের লেখার একটি নিজস্ব সিগনেচার ছিল, যেখানে তিনি উদ্ভটতাকে প্রশ্রয় দিয়েছিলেন। সেই সিগনেচার অবশ্য কারও ভাল নাই লাগতে পারে। সেটা ব্যক্তিগত মত। কিন্তু আমার মনে হয়, আশ্চর্য লার্জার দ্যান লাইফ প্লটকে প্রতিষ্ঠা করতে এই ধরনের ভাষা বেশ সহায়ক।
    দ্বিতীয়ত, ঋজু বলেছেন পাঠক কি নাটবল্টু চক্রের একটিও লেখা মনে করতে পারেন। আমি পারি। তাঁর ‘বৈজ্ঞানিক কুমোরটুলি’, ‘অমানুষিকী’ ইত্যাদি আরও অনেক লেখার কথা আমার আজও দারুণ ভাবে মনে আছে। একই ভাবে আরও কয়েকটা লেখার কথা তো বলাই যায়। কিন্তু তাতে লেখাটি অহেতুক দীর্ঘ হবে। মোদ্দা কথা হল, সেই লেখাগুলি তার প্লট ও আনুষঙ্গিক সব দিক থেকেই পাঠক হিসেবে তৃপ্ত করেছিল। কাজেই ঋজুর একটিও লেখা না মনে হবার মতো মনে হলেও আমি ভিন্নমত পোষণ করি। তা ছাড়া, নানা ব্যস্ততার কারণে বহু লেখা আজ আর পুরোপুরি মনেও করতে পারব না। কিন্তু সেই লেখাগুলির মুগ্ধতা আজও আমার সঙ্গে রয়েছে।
    আর একটা কথা। অন্য সম্পাদক লেখার বিচার করলে আরও নিখুঁত হতে পারত লেখা, এই কথায় কিন্তু সম্পাদক অদ্রীশকেও নিশানায় এনে ফেলেছেন ঋজু। কিন্তু ঘটনা হল, অদ্রীশ সম্পাদক হিসেবে কেমন, তার অনেক উদাহরণই প্রবীণদের লেখা ও কথা থেকে জেনেছি। প্রসঙ্গত বলি, রণেনবাবুই বলেছেন, তাঁর একেকটা লেখা কীভাবে অদ্রীশের সম্পাদনায় পরিমার্জিত ও পরিবর্ধিত হয়ে অন্যরকম হয়ে যেত। সেই সম্পাদক নিজের লেখার বিষয়ে উদাসীন থাকতেন, এটা কি ঠিক বিচার হল?
    শেষে যেটা বলতে চাই, সেটাই বোধহয় সবথেকে বড় কথা। হতেই পারে, নাটবল্টুর অনেক লেখাই আজ আর পড়তে ভাল লাগে না। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে, কোন সময়ে দাঁড়িয়ে তিনি এগুলি লিখেছেন। একজন মানুষ ছয়-সাত-আটের দশকে যে কাজটি করেছেন, তাকে এত বছর পরে বিচার করতে আমাদের একটু অন্যভাবে দেখা দরকার। তবে হ্যাঁ, পত্রিকা চালাতে গিয়ে অনেক বেশি লেখার জোগান দিতে হয়েছে। কাজেই কখনও কখনও যে তিনি নিজের প্রতি সুবিচার করেননি, সেটা ঠিক। কিন্তু আমার প্রশ্ন হল, এতটা তাড়াহুড়ো ছাড়াও যাঁরা লেখেন, তাঁদের কারও সব লেখাই কি উতরেছে? তা কি কখনও সম্ভব?
    যাই হোক, আপনি ভাল থাকুন ঋজু। নতুন নতুন আরও লেখা লিখুন। শুভেচ্ছা রইল।

    Reply
  • Sudip Deb

    প্রনাবচ কেন সেই অর্থে বাঙালি পাঠকের কাছে সমাদৃত হল না সেই বিষয়ে আমিও সহমত পোষণ করি। তবে আমার মনে হয় না অদ্রীশ বর্ধন তাঁর এই সিরিজটিকে অবহেলা করেছিলেন বলে। মনে হয় সচেতনভাবেই এই সিরিজ এবং চরিত্রগুলিকে তিনি এইরকমভাবেই উপস্থাপন করতে চেয়েছিলেন।

    Reply

Leave a Reply

Connect with

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

error: Content is protected !!
Verified by MonsterInsights