কামিনী আসবেই…
লেখক: সঞ্জয় বসু
শিল্পী: সুপ্রিয় দাস
কাঁঠাল গাছের ফাঁক দিয়ে জনক, সন্তানের মঙ্গল কামনার জন্য ইস্ট দেবতার কাছে প্রার্থনা করে যায়।
অবিশ্যি ওটা কাঁঠাল না হয়ে আম, জাম বা অন্য কিছু হলেও হতে পারতো, তবে যে বার বিপন্ন ভাব কাটিয়ে বাজারের নাভি থেকে খান চার বিচি ঠাঁই পায়, জানালার তল ঘেঁষে; সে বার জানা যায় নি সেগুলো কতটা গৌরব নিয়ে আসবে!
তবে এসেছিলো, আর সেই অর্থে ওগুলোর থেকে একটা, পূর্ণাঙ্গ কাঁঠাল গাছের রূপ নেয়;
তার মোটা দুই ডাল আকাশের দিকে যেন দু পা ফাঁক করে দাঁড়িয়ে আছে, জনকের সন্তান কাজে যায় সেই অক্ষ ধরে …..
আসুন আপনাদের একটা সত্যি ভূতের গল্প বলি। এমন এক ভূতের গল্প, যার শুরু শেষ কিছুই আমি আজও বুঝে উঠতে পারিনি। শেষ কালে যখন কেউ ফিসফিস করে বুঝিয়ে দিয়ে গেলো, “এটা ভূতের গল্প!”
খুব অবাক হয়ে ভাবলাম, এইবেলা তবে খাতা বন্দি করে রেখে যাই …?
১
“উকিল হয়ে আর সুখ নেই, বুঝলে যতীন? সে এক সময় ছিল যখন দু’পয়সা আসতো, সম্মান টম্মান ছিল, এখন মাস গেলে একটা খাঁ খাঁ ভাব! সংসার বড় নিষ্ঠুর হে। কোনো দিকে বাঁচতে দেয় না।
যুবতীর দেহ দেখেছো তো? সে নিজে জানে, তবে ভেতরের আগুনের আঁচ, না চাইতেও বেরোবে, ঝলসাবে, পোড়াবে!”
“অরে থামেন দেখি মশায়, আপনার সেই এক রা, ভ্যাজর ভ্যাজর, সংসার এক খান আপনেই করলেন? তবু যদি বুঝতাম, সংসারী হবার দায় রেখেছেন। বৌটা তো পালালো, তার যৌবনের জ্বালার হিসেবে কড়ায় গন্ডায় দিতে হচ্ছে পড়শীকে, ওসব ছাড়ুন দাদা, এবারে ছেলেটাও যাবে আপনার, সেদিকে নজর দিন“
“নাঃ হে যতীন, যদি আগে কোথাও দেখতাম, ৪৫ বছরের মা – বর, সন্তান ফেলে সংসারকে কলা দেখিয়ে, নুয়ে পড়া নিতম্ব বেঁধে প্রেমিকের সাথে পালিয়েছে, তবে সেটা এই সময়ের জন্য হয়তো তুলে রাখতাম। সে তো এ জীবনে দেখি নি? তাই আমার কাছে এটা একটা বিশাল পাওনা বলতে পারো।“
“যতটুকু পাওনার থাকে দাদা, এ জীবনে ততটাই পাইবেন। তাই নিয়েই মানিয়ে নিতে হবে তো! আপনি বরং কোথাও ঘুরে টুরে আসুন, মন ভালো হবে, বুঝলেন?”
সুবলের দিন এভাবেই কেটে যায়, দিন শুরু হয়, দেওয়ালে ছায়ার দৈর্ঘ বেড়ে চলে…. সূর্যের পতন ইতি টানে ধূসর দিনলিপির।
মনে পড়ে যায়, প্রায় ২০ বছর হবে?
কামিনী!
বেনারসির পাশ, কোনো এক শীতের রাত্রে বিলি কেটে দিয়ে গিয়েছিলো হিমেল হাওয়ায়। গন্ধ ভেসে আসে জানালা দিয়ে, আজও!
সে রাতে, হাস্নুহানার ঘ্রান বিছানায় জড়িয়ে থাকা দুই শরীরের সাথে অপার্থিব খেলায় মেতে উঠেছিল। রাশি রাশি ফুল, দলিত, বিচ্ছিন্ন—স্নিগ্ধ চাদরের ভাঁজে, জীবনী শক্তিকে আহরণ করে চলে – সে অনেক বছর আগের কথা …..
সুবল ভাবে, এমন গন্ধে কিছু অশুভ ইঙ্গিত লুকিয়ে থাকে। ওঁৎ পেতে থাকে অনিশ্চয়তার মাঝে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্যে। যেন বাক্স বন্দি পুরোনো কাপড়ের মাঝে চলে ফিরে বেরোয় আরশোলার দল। সুযোগ খোঁজে বেরিয়ে আসার! তখন চেটে রেখে গেলে, মুখে – দগদগে ঘা!
কাঁঠাল গাছ দু পা উপুড় করে শুয়ে থাকে আর সন্তান ফাঁকতালে মাঝ দিয়ে বেরিয়ে যায়। সুবল জানালার পাশে ভাবনার খাতিরে ভাবতে বসে, আর তার দিনরাত্রির গান রংচটা দেওয়ালে এঁকে রেখে যায় দুঃস্বপ্নের রূপকথা।
যখন সন্ধ্যে নামে, আলমারির পাশের ছোট মন্দিরটার ধুপ নিজের খেয়ালে জ্বলে ওঠে। তার রিন্ রিনে আঁকা বাঁকা নকশা লালচে পায়ের চাপ চাপ দাগ ফেলে রেখে যায় লাল সিমেন্টের মেঝেতে।
টপ টপ করে জলের ফোঁটাগুলো কল ঘর থেকে এসে ভিড় করে, এ ঘরের বিছানার পাশে। সুবলের ইচ্ছে হয় না পেছন ফিরে দেখার। তবু আড় চোখে যেন দেখা যায়, কেউ জবু থবু হয়ে ভিজছে। ঠিক তখনি চাঁদটা লাফ দেয় ইউক্যালিপটাস টার মাথায় – মন বলে – সে কথা রেখেছে!
জানালার শিক ধরে, ওপাশের জগৎটাকে অপার্থিব মনে হয়, যেন গলে পড়া চাঁদের আলোয় মিলেমিশে আছে, কিছু কাগজের ঘর বাড়ি। আপন মনে হেঁটে চলা রাস্তা, এখানে ওখানে বীজ বীজ করে কালো জামের মতো রাত।
চাঁদ, পাতার আড়াল হলেই, খেয়াল হয় রাতপাখি ডানায় পোষ মানিয়ে নিছে, পরের দিনের কোটর খোঁজার বাসনা।
এসব এখনো অবাক করে সুবলকে। শেষবার যবে বৌয়ের সাথে ঝগড়া করে বসেছিল গিয়ে মুসলমানের দীঘিতে? চারদিকে সবুজ শেওলা ধরা জলে, কাঠ ফড়িঙের নাচ, আজও ভুলতে পারেনি। ওরা কিভাবে বসে বুঝে পায় না সে, ওদের কোন দুটো পায়ে লুকিয়ে আছে স্থিরতা? এক জায়গায় এরা কতকাল বসেছে লাগাতার?
অনেক প্রশ্ন মনে।
নিজেকে বহুবার বুঝিয়েছে, সাধ মিটলেই সংসার খেলাঘর হয়ে যায় না। ভিখিরির বাড়িঘর বলতে যা বোঝায়, তা সবই ভিক্ষের দান। পাওনা বলতে দিন শেষের একটু ঘুম। এটাই যথেষ্ট, সকালে পেটের টানে এমনি খুলে যাবে চোখ। নিজের কাছে ভিখিরি ব্যতিত আর কিছু নয় সে।
পরের উচ্ছিষ্টে বেঁচে থাকা।
২
কোনোদিন সুবল বাড়ি ফিরে আসতেই, পিঠে কামিনী মুখ রাখতো। গোল হাতের বাঁধানো লোহার খোঁচা। বিকেলের শেষ রং মুছে যাবার সাথে সাথে, সন্ধ্যের অন্য আলো ওর মন কে তৈরি করতো সেই এক কথা শোনার জন্য।
“তুমি এমন করে ভাবলে কেন? এতো বছর পর? জানো? আমি সারা দুপুর কেঁদেছি?”
সুবল কিছু বলতো না।
তার শুধু একটা কথা মনে হতো – “সে তো আমিও কেঁদেছি, শুধু চোখ দিয়ে জল বেরোয়নি…..”
পুবের মাঠে শিখার কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে ছিল শ্যামল। যেই ঘাসগুলো গত বছর জ্বলে জ্বলে গুঁড়ো হয়ে গেছিল, তারা আজ আবার সবুজ জোয়ার নিয়ে এসেছে।
শিখার পেটটা গন্ধরাজ ফুলের মতন, অনেকবার শ্যামল ওর নাভির থেকে অঘ্রান টেনে তুলে নিয়েছে ফুসফুস ভরে। ভেজা ভেজা, পূর্ণ সুখের সেই শরীর। ও বুঝে পায় না এই বিজাতীয় গন্ধের কোনো রহস্য।
নিজের গা শুঁকে, ঘৃনায় নাক কুঁচকে, নিজেকে বেশ্যার ছেলে ভেবে, শূন্য চোখে শিখার ছোটছোট আনন্দ গুলোকে ও আপন করে নেয়।
– “তোমার মার কোনো খবর আর পাওয়া গেলো না, তাই না?” শিখা খুব ভেবে কথাগুলো বলেনি, হঠাৎ কেন জানি না মনে পড়ে গেলো।
-“জানি না কোথায়, কোন চুলোয় পড়ে আছে, মা বলে ডাকি না। জানো দোষটা শুধু বাবার। ওই মেয়ে লোকটির স্বভাব জানতে পারলো না?” এমন করে, এমন ভাবে মাঝে মাঝে নিজের জন্ম তার উপরে বিতৃষ্ণা জেগে ওঠে।
শিখার আঙুলগুলো সবুজ ঘাসেদের প্রশ্রয় দিয়ে চলে।
-“শালার সময় ঘনিয়ে এসেছে, মাঝরাত্রে কামিনী কামিনী বলে চাঁদের আলোয় ছাদে ঘুরে বেড়ায়। একদিন মরবে, দেখো তুমি“
শিখার হাসির রেশ মিলিয়ে যাবার আগে, ট্রেনের শব্দ পেয়ে উঠে বসে শ্যামল।
এই সময়টা ওর বেশ অন্যরকম লাগে। দ্রুত ছুটে চলা ট্রেনের জানালা দিয়ে ভেতরের মানুষদের সবার মুখ এক রকম মনে হয়। হলুদ প্রেখ্যাপটে, কালো কালো মাথার দল, দোল খেয়ে এগিয়ে চলেছে। কেউ কেউ বাইরে তাকিয়ে দেখে। ওর হাসি পেয়ে যায়। শালারা কিস্যু দেখতে পায় না, কিস্যু বোঝে না। তাও জানালা দিয়ে বাইরে দেখবে। কি এতো খোঁজে? যা কুকুরের পাল বাড়ি ফিরে যা।
এভাবে এগিয়ে চলে জীবনের ছন্দ, সব জীবন তবে আলোয় আলোয় ভরে থাকে না। কিছু জীবনের ছন্দ দ্বিধা দ্বন্দে মিশে অন্ধকারের বুকে সুখ খুঁজে নেয়।
সেদিন পূর্ণিমা, আকাশ জুড়ে হলদে চাঁদের মেলা। অনেক গুলো চাঁদ। কয়েকটা আবার নামবে নামবে করছে তাল–খেজুরের সবচেয়ে উপরের পাতাগুলির খাঁজে।
কেউ কেউ ধপ ধপে সাদা পা, রাত্রির কালো শাড়ির ভেতর থেকে মেলে ধরবে আলসেতে বা জীর্ণ প্রাচীন কোন উঠোনে। কি ভীষণ আলো!!!
তীব্র, শীতল,গভীর, মৃত্যুর মতন সহজ।
আজ, পাশের ঘরে কেউ নেই। শ্যামল দু দিন বাড়ি ফেরেনি। ও ঘরটা তাই বন্ধ করে রেখেছে সুবল। পাছে অন্য কেউ ঢুকে পরে… এমন আকছার হয়, একই চেনাজানা ঘরে, অচেনা লোকে বাসা বেঁধে ফেলে। বোঝার উপায় থাকে না।
আজ দুপুর থেকে কিছু খায়নি সুবল। দিনের শেষে শুধু এক গ্লাস জল।
আজ এক বছর পূর্ণ হবে।
আজ কামিনী আসবেই …..
আমার সাথে সুবলের পরিচয় তা প্রায় বছর পাঁচেক হবে। আমার অফিসার পেনশনটা আটকে ছিল। সেই সূত্রে ওর সাথে দেখা হয়, অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে শেষ অবধি পেনশন আর হস্তগত হয়ে ওঠেনি। তার চিন্তাও আর করি না। মাস গেলে ৬০০০ টাকা নতুন আর কিছু নিয়ে আসবে না আমার জীবনে। এমনিতেও আর খুব বেশিদিন আর হাতেও নেই। জমানো সঞ্চয়ের সুদ দিয়েই এই কতদিন কেটে যাবে। তবে হ্যাঁ, বাড়তি পাওনা একটা আছে, আর সেটা সুবলকে চেনা।
অফিসের নিচের চায়ের দোকানে গ্রীস্মকালের তপ্ত রোদ্দুরে ঝিম মেরে বসে থাকতাম। বাসি কালো চা টগবগিয়ে ফুটে চলেছে। এক দৃষ্টিতে দেখতে দেখতে মনে কেমন একটা ঘোর লেগে যেত। এ যেন সেই আরব্য রজনীর আলাদিনের প্রদীপ। ভেতরে কোন জীন পরী বেরিয়ে আসার চেষ্টা করে করে, বাসনের চারধার পুড়িয়ে কালো করে দিয়েছে।
তলায় অজস্র কালো পিঁপড়ে ঘুরে বেড়ায়। দোকানির কাঁচের গেলাস, কেটলি ছলকে ভরে ওঠে… দু–চার ফোঁটা নিচে পড়ে…..যেন শুকনো ধুলোয় অকাল বৃষ্টির মতো….পিঁপড়েদের কাছে… ঠিক পাশেই পায়ের নখ খুঁটে খেয়ে চলতো পাগলীটা…আর থেকে থেকে বলে উঠতো….”চা দিবিনে?….এসব আমি অবসরে বসে বসে দেখতাম…এখনো, তখনো, সব সময় আমার অঢেল অবসর।
মানুষের কোন সময় কার প্রতি টান জেগে ওঠে বলা মুস্কিল. সুবলকে দেখে কখনো নিজের কথা ভাবতাম… পয়সার লেন দেনের বাইরে, সস্তার মদ ভাটিতে উপচে পড়ে…তখন জাতিগত বা শ্রেণীগত ভেদাভেদ থাকে না, এটা আজকের কাহিনি নয়। তবে সত্যি কথা হলো, এখন পেনশন অজুহাত মাত্র। এখনো শনিবার আমরা রোজই বসি। রোজগার ছাড়া, রোজ নতুন নতুন শনিবার….
সেদিনের কথা মনে পড়ে, নেশায় চোখ লালচে হয়ে এসেছিলো ওর, এক হাতে গ্লাস ধরে, অন্য হাত দিয়ে মুখ মুছে বললো:
“তুমি বিশ্বাস করছো না তো? এটাই সত্যি…আমি নিজের চোখে দেখলাম…সেই এক শাড়ী, হাতের লোহা …. শুধু মুখটা দেখায় না … এটা বুঝি না … তোর শালী এতো লজ্জা কিসের?” বেজন্মা ওই হারামির শরীর বয়ে চলেছিস, আর শুধু আমার বেলাতেই? বুঝলে? সারা মাটি জুড়ে জলের দাগ! উন্মাদ করে দেবে আমাকে ও।”
আমি যতটা সম্ভব শান্ত হয়ে বলি: “ছেলেকে বলেছো?”
“তোমার মনে হয় ও এসব বিশ্বাস করতো? মার প্রতি কোনো দরদ আছে ওর? তোমাকে বলিনি? মাঝে মধ্যে মনে হয়, ওর জন্যেই তো সব হারালাম। নাহ এসবের ধারে কাছেও ও থাকে না।”
“তুমি বললে, ভেজা শাড়ী, আগেও দু তিন বার বলেছো, মনে পড়ে? সুবল বেনারসি ভিজলে বড়ো ভারী হয়ে যায়। তুমি মনে হয় আবার ওষুধটা বন্ধ করেছো। মনের চাপ বেড়েই চলেছে তোমার। সন্দেহ হয়, বরং বলি ভয় হয় তোমাকে নিয়ে, কোনদিন নিজের মৃত্যু নিজেই না ডেকে আনো।”
আমার সাথে সুবলের এর পরেও বেশ কয়েকবার দেখা হয়েছিল। সে সব মামুলি ব্যাপার। ও প্রায় নিজের জীবনের ছোট খাটো অভিজ্ঞতাগুলো আপন খেয়ালে বলতে ভালোবাসতো।
ওদিকে আমার শারীরিক সমস্যা প্রতিদিন বেড়েই চলেছিল। অনেক সময় ভাবতাম, “আসলে, অসুস্থ কে?” সুবল না আমি?
নাকি, আমাদের বাদ দিয়ে যারা চারদিকে বাঁচছে তারা?
“মা, তোর সুবলকে মনে আছে? ও আর নেই। আমি এই ভয়টাই পেয়েছিলাম জানিস? গত রোববার, বন্ধ ঘরের মধ্যে হার্ট ফেল করে মারা গেছে। এটা হবে আমি জানতাম, তবে এইভাবে আর, এতো তাড়াতাড়ি! এটা ভাবতে পারিনি।
তোকে তো ওর কথা সবই লিখেছি। জীবনটা অকারণে অপচয় হয়ে গেল। একটা মানুষ শুধু অন্তরের যন্ত্রনায় জ্বলে পুড়ে শেষ হয়ে গেল, নিজের চোখের সামনে দেখা এটা আমার প্রথম ও শেষ ঘটনা, বলা চলে। মুখে আগুন দিতে ওর ছেলে আসেনি।
ওর সাথে শেষ যে বার দেখা হয়, কেঁদে কেটে একই কথা বারবার বলেছিল।
“মুসলমানের পুকুরের নিচে শুয়ে আছে কামিনী, গোল সাদা হাতে খড়কুটো আঁকড়ে ধরার সে কি প্রবণতা!! গব গব করে জল খেয়েছিলো অনেকক্ষন। আমার দু হাতে তখন জোরটা তুমি দেখতে ভায়া! বেটিকে মাথা তুলতে দিলে তো!!!”
তবে কি সত্যি কামিনী ফিরে এসেছিলো?”
এবারো চিঠিটা লিখে পোস্ট করিনি, বাক্সে রেখে দিয়েছি, আগের গুলোর সাথে। বিগত পাঁচ বছরে এমন অনেকগুলো একে একে জমা পড়ে আছে। সেই যেবার থেকে মেয়েটা গোধূলির রং এ মিশে গেলো…তবু, কথাগুলো কোথাও তো ঠিকানা খুঁজে নেবে?
আজকাল আমি অনেক কিছু এড়িয়ে চলি। আমি জানি, আলাদা আলাদা রূপে, কামিনীরা আসে। মেয়ে সেজে, বৌ সেজে…সে আপনি মাঝ পুকুরে যায়…বা কম জলে…
ভালো করে লক্ষ্য করে দেখেছি, সুবলের বাগান ঘেঁষা ভাঙা জানালার ওপাশে কেউ দাঁড়িয়ে থাকে, কাঁঠাল গাছের ডাল এর ফাঁক দিয়ে…
আমিও অপেক্ষায় আছি …
Tags: আধিভৌতিক গল্প, কামিনী আসবেই..., গল্প, দ্বিতীয় বর্ষ দ্বিতীয় সংখ্যা, সঞ্জয় বসু, সুপ্রিয় দাস
কবিতা পড়ার রেশ থেকে গেল।