বিধুশেখর
লেখক: প্রদীপ কুমার সেনগুপ্ত
শিল্পী: সৌরভ দে
সুমন্তবাবুর মন খারাপ। আজ বিকেলে বাস থেকে নামতে গিয়ে পড়ে গেলেন। চোট খুব একটা লাগেনি। কিন্তু বুঝতে পারছেন একটু সাবধানে চলাফেরা করা দরকার। সুমন্তবাবু থাকেন বেহালা চৌরাস্তার কাছে। আজকাল এখানে রাস্তায় চলাফেরা করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। একই রাস্তায় মানুষ, সাইকেল, বাস, রিকশা, অটো নিয়ে নিত্য যানজট লেগেই আছে। বাড়ি ফেরার সময় মনে মনে ভাবতে থাকলেন, পড়ে গেলেন কেন? ঠিক কী হয়েছিল পড়ে যাওয়ার আগে? কিন্তু কিছুতেই পড়ে যাওয়ার আগের মুহূর্তটা মনে করতে পারলেন না। একেই কি স্মৃতিভ্রম বলে? কিন্তু স্মৃতিভ্রমের তো আর কোনও লক্ষণ তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না। সেদিন সারা দিন কী কী করেছিলেন তার একটা হিসেব নিলেন মনে মনে। ঠিক মনে আছে সব কিছু। এমনকী খুব কম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাও মনে আছে। শুধু পড়ে যাওয়ার আগের কয়েকটা মিনিট কিংবা সেকেন্ড তাঁর মন থেকে মুছে গিয়েছে।
সুমন্তবাবু একটু গভীরভাবে চিন্তায় পড়ে গেলেন। এমন কিছু বয়স হয়নি। এই তো সবে ঊনপঞ্চাশ পার করেছেন। শরীর বেশ শক্তসামর্থ। নিয়মিত ব্যায়াম করেন। চাকরি যদিও করেন না। তিনি লেখেন। দেশ-বিদেশের নানা পত্রিকায় বিজ্ঞান প্রবন্ধ আর কল্পবিজ্ঞানের গল্প লেখেন। কয়েকটা বইয়ের রয়্যালটি পান বিদেশ থেকে। যা পান দিব্যি চলে যায়। মাঝে মাঝে সেমিনারে যান, যে জন্য দেশভ্রমণও হয়ে যায়। তবে বিয়ে এখনও করেননি। একাই থাকেন। নিজেই রান্নাবান্না করেন। বন্ধুদের ডেকে খাওয়ান। কোনও পোষ্য নেই, দায়ও নেই। কাজেই তাঁকে সুখী মানুষদের পর্যায়েই ফেলা যায়।
বাড়ি ফিরে কিছুক্ষণ চুপ করে বসে রইলেন। ভাবলেন, তাহলে কি একা থাকা ঠিক হচ্ছে না? একটা বিয়ে করা কি দরকার? আজকাল এই বয়সে আকছার বিয়ে হচ্ছে। পাত্রী পেতে একটু সমস্যা হতে পারে। কিন্তু তারও হাজার সমাধান বেরিয়ে গেছে এই যুগে। কী করবেন মনস্থির করতে পারলেন না। কিছুক্ষণ বসে থাকার পর ভাবলেন, একটু ইন্টারনেট সার্চ করে দেখি এ বিষয়ে কিছু তথ্য পাওয়া যায় কিনা।
আধঘণ্টা ইন্টারনেটে সার্চ করে তাঁর মাথা ঝিমঝিম করতে লাগল। এ তো ভারি বিপদ দেখছি। ওই সামান্য পড়ে যাওয়া আর পড়ে যাওয়ার আগের ঘটনা ভুলে যাওয়ার পিছনে নাকি হাজারটা রোগ লুকিয়ে আছে। এবং প্রতিটি রোগেরই হাজার রকমের চিকিৎসাও আছে। হঠাৎ তাঁর মনে পড়ে গেল, পরশুরামের লেখা ‘চিকিৎসা বিভ্রাট’ গল্পটার কথা। চিকিৎসা, শেষ পর্যন্ত বিয়েতে গিয়ে শেষ হয়েছে। নাহ্! এখনই তিনি এসবের মধ্যে যাচ্ছেন না।
কিন্তু একটা ভাবনা কয়েকদিন ধরেই তাঁর মাথায় খেলছে। সম্প্রতি তাঁর দুটো প্রবন্ধ প্রকাশের অযোগ্য বলে ফেরত এসেছে। নতুন গল্পগুলোও আর সেরকম জমছে না। নতুন নতুন প্লট খুঁজেও পাচ্ছেন না। মনখারাপের এটাও একটা বড় কারণ।
মেল খুলে দেখলেন অনেক চিঠি এসেছে। একজন প্রকাশক লিখেছেন নতুন প্রবন্ধ দরকার। কিন্তু হঠাৎ চোখ পড়ল একটা চিঠির দিকে। মেলের প্রেরক তাঁর অজানা। কিন্তু নামটার মধ্যে কী যেন একটা অতি পরিচিতের গন্ধ। প্রফেসর সামারভিল। সুমন্তবাবু এই নামে কাউকে চেনেন না। কিন্তু নামটা অতি পরিচিত। বহুবার এই নাম নিয়ে তিনি নাড়াচাড়া করেছেন। ভাবলেন চিঠিটা খুলেই দেখি। চিঠিটা বড় নয়। বাল্ক মেল। মানে একসঙ্গে অনেককে পাঠানো হয়েছে। যাদের পাঠানো হয়েছে তারাও কেউ কেউ তাঁর অতি পরিচিত। কিন্তু সবাই বাঙালি। চিঠিটা এই রকম:
“মহাশয়
আমার নাম আর্নেস্ট সামারভিল। আমি অস্ট্রিয়ার গ্লোবাল চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের ডিরেক্টর। আমাদের প্রতিষ্ঠান বিশ্বের উষ্ণায়ন নিয়ে হিমবাহের উপর কাজ করে। সম্প্রতি আমি আল্পসের একটি শিখরে একটি অদ্ভুত জিনিস কুড়িয়ে পেয়েছি। এটি একটি মাইক্রোচিপ। একটি ছোট্ট কৌটোর ভিতরে রাখা আছে। কৌটোটি এমন একটি ধাতু দিয়ে তৈরি যা আমাদের কাছে অজানা। আমরা এর বিশ্লেষণ করছি। এটির খোলের উপর যা লেখা আছে তা বাংলা ভাষায়। আমি তার একটি ছবি এই চিঠির সঙ্গে অ্যাটাচ করেছি। সব থেকে আশ্চর্যের বিষয় হল ওই চিপটি আমাদের কোনও কম্পিউটারেই খোলা যায়নি। কাজেই তার ভিতরে কী তথ্য আছে তা বের করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের ধারণা এটি কোনও বাঙালি বিজ্ঞানীর কাজ।
আমরা কয়েকজন ভারতীয় ও বাংলাদেশি বিজ্ঞানীর কাছে এই চিঠি পাঠালাম। তাঁরা যদি এই বিষয়ে কিছু আলোকপাত করতে পারেন।
আপনার উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম।
ইতি
শ্রদ্ধা জ্ঞাপনান্তে
আর্নেস্ট সামারভিল।”
চিঠির সঙ্গে অ্যাটাচমেন্ট খুলে সুমন্তবাবু দেখলেন। একটা চৌকো বাক্সের ছবি। তার উপর খুদে খুদে অক্ষরে বাংলায় লেখা রয়েছে ‘বিধুশেখর’।
চিঠিটা পাওয়ার পর সুমন্তবাবু ভাবলেন এটা তো বেশ বড় খবর। সারা পৃথিবীতে নিশ্চয়ই এটা নিয়ে বেশ চাঞ্চল্য পড়ে গিয়েছে। কিন্তু তারপর ক’দিন নেট ঘেঁটে কিংবা রেডিও, টিভি, খবরের কাগজ— কোথাও এ বিষয়ে কোনও খবর পেলেন না। শুধু ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের সাইটে একটা খবর রয়েছে। তা হল, “মিস্টিরিয়াস মাইক্রোচিপ, ফাউন্ড ইন আল্পস।” ব্যাস ছোট্ট একটা প্রতিবেদন হিসাবেই রয়ে গিয়েছে।
এর পরে কয়েকদিন কেটে গিয়েছে। এই সময় নানা সেমিনারের ডাক আসে। সেমিনারগুলো সাধারণত পুজোর পরেই হয়। এবার পুজোর পরে কোনও সেমিনারের ডাক এখনও আসেনি। তাই ভাবলেন নভেম্বর মাসটা কোথাও একটা ঘুরে আসি। যোগেশ বাভারিয়া বলে একটি ছেলে তাঁর সহপাঠী ছিল। সে বলল, “সম্প্রতি আমরা গিরিডিতে একটা বড় বাগানবাড়ি কিনেছি। পচম্বার কাছে। বাঙালি কোনও বিখ্যাত লোকের বাড়ি ছিল। ওখানে গিয়ে কয়েকদিন থাকতে পারো। তোমার লেখালেখির সুবিধা হবে।”
সুমন্তবাবু ভাবলেন, ঠিক আছে তাই যাব। খোলা জায়গায় গেলে একটু চাঙ্গা বোধ করা যাবে।
গিরিডি স্টেশনে নামতেই যোগেশ তার গাড়ি নিয়ে তাকে সোজা বাড়িটায় নিয়ে এল। সুমন্তবাবু বাড়িটা দেখে অবাক হয়ে গেলেন। প্রায় তিন একর জায়গার উপর প্রাসাদের মতো বাড়ি। বিরাট বড় বাগান রয়েছে। চারদিক একেবারে ফাঁকা। ধারেকাছে আর কোনও বাড়ি নেই। যোগেশ বলল, “তোমার যতদিন ইচ্ছা থেকে যাও। একটা মালি কাম কেয়ারটেকার রেখেছি। ওকে বললেই সব কাজ করে দেবে। বাজার অনেক দূরে। ও সাইকেল করে সব এনে দেবে।”
সুমন্তবাবুর বেশ পছন্দ হল বাড়িটা। মাসখানেক কাটানো যাবে। বাড়িটাতে অনেকগুলো ঘর। একতলায় সাত-আটটা। তবে বেশিরভাগই বন্ধ। অনেক ঘুরে একটা ঘর তাঁর বেশ পছন্দ হল। দক্ষিণ খোলা। বেশ রোদ আসে। জানালা দিয়ে বাইরে বাগান দেখতে পাওয়া যায়। সুমন্তবাবু গাছপালা বিশেষ চেনেন না। কিন্তু বুঝতে পারলেন গাছগুলো বেশিরভাগই ফলের। একটা গাছ দেখে একটু অবাক লাগল। গাছের পাতাগুলো আম গাছের মতো। কিন্তু ফল যেটা ধরে আছে তা আমের মতো নয়। বরং আপেলের সঙ্গেই তার মিল বেশি।
চার-পাঁচ দিনের মধ্যেই সুমন্তবাবু নিজেকে খাপ খাইয়ে নিলেন বাড়িটার সঙ্গে। নিজের মতো করে একটা রুটিনও বানিয়ে নিলেন। সকালে বেড়ানো। তারপর একটু রান্না। তারপর ল্যাপটপ নিয়ে কিছু লেখালেখি। লেখালেখিতে বিশেষ এগোতে পারছেন না। মাথার ভিতরে যেন চাপ বেঁধে আছে। নতুন কোনও লেখা মাথাতেই আসছে না। এখানে নেটওয়ার্ক খুব খারাপ। দিনে দু’-তিন ঘণ্টার বেশি নেটে থাকতেই পারছেন না। এর মধ্যে একদিন বাগানে গিয়ে ওই আপেলের মতো আম নাকি আমের মতো আপেল খেয়ে দেখেছেন। অদ্ভুত স্বাদ। খাওয়ার পরে বেশ কিছুক্ষণ খিদে থাকে না। শরীরও বেশ চাঙ্গা লাগে।
বাড়িটার সিলিং খুব উঁচু। প্রায় পনেরো ফুট। উঁচু উঁচু বার্মা টিকের দরজা। সুমন্তবাবু এর মধ্যে মাঝে মাঝে চেষ্টা করেছেন বন্ধ ঘরগুলিতে কী আছে দেখার। কিন্তু খুব পুরনো তালা দিয়ে সব ক’টাই বন্ধ। সুমন্তবাবুর বারংবার মনে হতে লাগল বন্ধ ঘরগুলিতে কী আছে একবার দেখা দরকার। পুরনো বাড়ি, হয়তো অনেক রহস্য লুকিয়ে আছে এখানে।
যোগেশ এই বিষয়ে কিছু জানে কিনা বা সে যাঁর কাছ থেকে বাড়িটা কিনেছে তিনি কিছু জানতেন কিনা এটাও জানা দরকার। অনেক ভেবে সুমন্তবাবু যোগেশকে ফোন করে বললেন, “ভাই তুমি এই বাড়ি কার কাছ থেকে কিনেছ, তার নাম বলতে পারবে?”
যোগেশ বলল, “নাম বলতে পারব। কিন্তু তারা তো এ দেশে থাকে না। নিজেরা ওই বাড়িতে কোনওদিন থাকেনি। বহুদিন বাড়ি বন্ধই ছিল।”
সুমন্তবাবু বললেন, “তুমি ওই বাড়ি কিনলে কী ভাবে?”
“ওই যোগাযোগ হল আমাদের এক রিলেটিভের মাধ্যমে। তারপর ওরা এসে বিক্রি করে দিয়ে গেল। দাম সস্তা পড়ল, কিনে নিলাম। তা তোমার কিছু অসুবিধা হচ্ছে নাকি?”
সুমন্তবাবু বললেন, “অসুবিধা নয়, তবে অনেকগুলো ঘর বন্ধ। কী আছে ওখানে কে জানে। তোমার কাছে চাবি আছে নাকি?”
যোগেশ বলল, “চাবি তো নেই। আমিও বাড়িটা ভিতরে গিয়ে দেখিনি। সবটাই এজেন্টের মাধ্যমে হয়েছে। ঠিক আছে, আমি এ মাসে এক মাসের জন্য ইউকে যাচ্ছি। ফিরে এসে দেখব। তুমি যদি ততদিন থাকতে চাও থেকে যেতে পারো। একটা চাবিওলা ডেকে ঘরগুলি খুলিয়ে নাও না। তারপর যে ঘরটা পছন্দ হবে সেটায় থেকে যাও।”
সুমন্তবাবু ঠিক করলেন, তিনিই এই রহস্যভেদের চেষ্টা করবেন। কাউকে কিছু না বলেই ঘরগুলো খুলে দেখবেন। কালকেই একজন চাবিওলা ডেকে আনতে হবে।
চাবিওলা ডেকে দরজা খুলতে গিয়ে আর এক বিপত্তি হল। চারটে বন্ধ ঘরের তিনটের তালা বেশ সুন্দর খুলে গেল। ঘরগুলোতে কিছুই নেই। ফাঁকা ঘরে ধুলো জমে রয়েছে। চার নম্বরের দরজার পাল্লাটা খোলার পরে দেখা গেল ভেতরে আর একটা পাল্লা রয়েছে। সেটা কাঠের নয়। ধাতুর তৈরি, পাথরের মত শক্ত আর ঠান্ডা। মাঝখানে একটা বড় ফুটো। ফুটোটার চারপাশে আরও কয়েকটা ফুটো। দরজাটা চওড়াও একটু বেশি। সাড়ে চার ফুটের মতো। লম্বায় প্রায় বারো ফুট। উপরের দিকে আরও তিনটে ফুটো। ভালো করে তাকিয়ে দেখলে মনে হয় একটা মানুষের মুখ। ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে।
কাঠের দরজা বন্ধ করে নিজের ঘরে এসে শুয়ে পড়লেন। এই বাড়িতে একটা কিছু রহস্য আছে। কিন্তু তার কুলকিনারা পাওয়া যাচ্ছে না। দরজাটাই বা এমন অদ্ভুত কেন? লুকনো ক্যামেরা-ট্যামেরা আছে নাকি? চোর, ডাকাতরা আসে নাকি মাঝে মাঝে? কিন্তু সেরকম কিছুর আভাস তিনি এত দিনেও পাননি। আরও দু’-চার দিন কেটে গেল এইভাবেই।
তিনি যে ঘরে থাকেন সে ঘরে একটা বিশাল আলমারি আছে। একদিন সেটাই খুলে ফেললেন। অসংখ্য তাক। তাকের গায়ে নানা রকমের বোতাম বসানো। একটা বোতামে চাপ দিতেই একটা ড্রয়ার হঠাৎ খুলে গেল। ড্রয়ারে ভিতরে বিশেষ কিছু নেই। একটা মোটা খাতা রয়েছে। যাক সময় কাটানোর মতো একটা জিনিস পেলেন ভেবে সুমন্তবাবু খাতাটা নিয়ে আলমারি বন্ধ করে দিলেন।
খাতাটা খুলে দেখলেন তার ভিতরে হাজারটা অঙ্ক আর নানান ধরনের নকশা আঁকা রয়েছ। একটু নেড়েই বুঝতে পারলেন এটা কোনও বিজ্ঞানীর ডায়রি। এর ভিতরে তাঁর এক্সপেরিমেন্টের নানা বিষয়ে লেখা আছে। বেশ কিছু পাতা ওলটাতেই দেখলেন বেশ কয়েক পাতা বাংলায় লেখা আছে। লেখাটা খুব পরিষ্কার। সুন্দর হাতের লেখা। লেখকের নাম খুঁজতে খুঁজতে একেবারে শেষের পাতায় গিয়ে তাঁর চক্ষু স্থির হয়ে গেল। মাথা ঝিমঝিম করতে লাগল। তিনি যে এক অমূল্য জিনিস পেয়েছেন তা বুঝতে কিছুটা সময় লাগল। ডায়রির শেষ পাতায় পরিষ্কার হাতে লেখা রয়েছে ডায়রির মালিকের নাম। ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কু।
সুমন্তবাবু বাগানের বেঞ্চিতে বসে ডায়রি খুলে পড়তে শুরু করলেন। ডায়রিতে ষাট-সত্তর পাতা লেখা রয়েছে। সবটাই এক বিজ্ঞানীর মহাকাশ ভ্রমণের গল্প। যেমন বিস্ময়কর, তেমনই গায়ে কাঁটা দেওয়া সব অভিজ্ঞতা। এক জায়গায় লেখা আছে, “পৃথিবীর সময় এখন কী তা জানি না। আমাদের রকেট কিছুক্ষণ আগে সৌরণ্ডলে প্রবেশ করেছে। এই লম্বা পথ পাড়ি দিতে আর কত সময় লাগবে জানি না। কিন্তু দেশে ফেরার জন্য, বিশেষ করে আমার গিরিডির বাড়ির জন্য মনটা উতলা হয়ে আছে। এবারের যাত্রায় আমার পোষা বেড়াল নিউটনকে সঙ্গে আনা হয়নি। তার জন্যও মনটা উতলা হয়ে আছে।”
১২/১০/১৯৯৯
আমরা কিছুক্ষণ আগে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ সীমানায় ঢুকেছি। হয়তো কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মাটিতে পা রাখতে পারব। কিন্তু দেখছি বিধুশেখর বারবার করে রকেটটাকে উল্টো দিকে চালানোর চেষ্টা করছে। মনে হচ্ছে বিধুশেখর দেশে ফিরতে চায় না। যন্ত্রমানবদের নিয়ে এই একটা সমস্যা। ওদের মতিগতি মাঝে মাঝে একেবারে বোঝা যায় না। অগত্যা ওর পেটের কাছ থেকে ওর কন্ট্রোল সিস্টেমের চিপটা খুলে ওকে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছি। বিধুশেখর এখন ঘুমোচ্ছে। চিপটা খুলে রুবোট্যান্টানিয়াম অ্যালয়ের কৌটোর মধ্যে রেখে দিলাম।”
১৫/১০/১৯৯৯
বিধুশেখরকে ঘুম পাড়িয়ে না রাখলেই বোধহয় ভালো হত। ও বারবার রকেটটাকে অন্য পথে চালানোর চেষ্টা করছিল। ও আগেই বুঝতে পেরেছিল উল্কাটা এই দিকেই আসছে। গতকালের সেই ভয়ঙ্কর সংঘর্ষ আমি জীবনে ভুলব না। আমি আর বিধুশেখর আমাদের লাইফবোটে উঠে মহাকাশে ভেসে গেলাম। কিন্তু বাকি সব কিছু কোথায় যে ছিটকে পড়ল জানি না। বিধুশেখরের কন্ট্রোল সিস্টেমের মেমরি চিপের বাক্সটা যে কোথায় ছিটকে গেল। সেটা না পাওয়া গেলে তো বিধুশেখর অচল। আর সব কিছু আমি আবার বানাতে পারব। কিন্তু বিধুশেখরকে আর বানাতে পারব না। বিধুশেখরের ওই কন্ট্রোল চিপের মধ্যেই রয়েছে বিধুশেখরের প্রাণ।
২৬/১২/২০০৯
অবশেষে আর একবার আমার মহাকাশযাত্রার ব্যবস্থা করে ফেলেছি। মনে হয় এটাই শেষ যাত্রা। তবে এই রকেটটা আকারে অনেক ছোট। এর জ্বালানিটাও আমার আবিষ্কার। সামান্য জ্বালানিতেই কয়েক আলোকবর্ষ মহাকাশ ভ্রমণ করতে পারবে এটা। কিন্তু একটাই দুঃখ, বিধুশেখরকে রেখে যেতে হচ্ছে। ওকে নিয়ে আর লাভ নেই। চিপটা না থাকায় ও এখন একটা মৃত রোবট। আমার এতকালের সাথীকে ফেলে যেতে বড্ড কষ্ট হচ্ছে। তবে ওকেও কিছুটা বদলে দিয়েছি। ও নিজেই এখন একটা মহাকাশযান। ওর ভিতরে প্রচুর পরিমাণে আমার আবিষ্কৃত জ্বালানি ভরা আছে। চিপটা পেলে ওকেও সঙ্গে নিয়ে যেতে পারতাম। যদি ফিরে আসি ওকে আবার নতুন করে তৈরি করব।
ডায়রিতে আরও অনেক পাতা ধরে অনেক কিছু লেখা আছে। কিন্তু সব কিছুর মধ্যেই রয়েছে একটা দুঃখ— সেই মেমরি চিপের জন্য। মনে হয় এটাই প্রফেসর শঙ্কুর শেষ ডায়রি। প্রফেসর শঙ্কুর শেষ পর্যন্ত কী হল, তিনি এই দেশেই মারা গেছেন নাকি মহাকাশে অন্য কোনও গ্রহে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তা আর জানা যাচ্ছে না।
সুমন্তবাবু বুঝতে পারলেন তিনি এক অমূল্য জিনিস পেয়েছেন। অন্তত সামারভিলের চিঠিটার রহস্যের চাবি এখন তাঁর হাতে। সামারভিল যে মেমরি চিপ পেয়েছেন তা বিধুশেখরের। প্রায় কুড়ি বছর ধরে সেটা আল্পসের বরফের নীচে পড়ে ছিল। কিন্তু বিধুশেখর এখন কোথায়? রকেট ধ্বংস হওয়ার পরে বিধুশেখর তাঁর সঙ্গেই ছিল। প্রফেসর শঙ্কু যদি শেষমেশ গিরিডিতেই এসে থাকেন তা হলে বিধুশেখরও তাঁর সঙ্গেই এখানে এসেছিল। সুমন্তবাবু মনে মনে তাঁর ভাগ্যকে ধন্যবাদ দিতে থাকলেন। হঠাৎ এই গিরিডিতে ছুটি কাটাতে আসা আর এই বাড়িতে থাকা সৌভাগ্যের ব্যাপারই বটে। প্রফেসর সামারভিল নামটাও কেন চেনা লেগেছিল তাও বুঝতে পারলেন। প্রফেসর শঙ্কুর প্রকাশিত ডায়রিগুলিতে একজন সামারভিলের নাম আছে। তিনি অবশ্য এই সামারভিল হতে পারেন না। অন্য কেউ হবে হয়তো।
এখন শুধু একটাই কাজ। বিধুশেখরকে খুঁজে বের করা। কিন্তু কাজটা করতে হবে গোপনে। কাউকে জানতে দেওয়া চলবে না। এমনকী মালিকেও নয়। এই বাড়িটা যে প্রফেসর শঙ্কুর ছিল তাতে আর কোনও সন্দেহ নেই। এখানেই ছিল তাঁর ল্যাবরেটারি। এই বাগানেই তিনি অদ্ভুত অদ্ভুত ফলের গাছ বানিয়েছিলেন। এই মুহূর্তে এক অমূল্য সম্পদ তাঁর হাতের মুঠোয়। কিন্তু এই বাড়ি, ডায়রি, সবই এখন যোগেশ বাভারিয়ার সম্পত্তি। সে এ সবের কোনও মূল্যই জানে না।
ডায়রি পড়ে সুমন্তবাবুর মনে হল প্রফেসর শঙ্কু বিধুশেখরকে সঙ্গে নিয়ে পৃথিবীতে এসে নেমেছিলেন এবং বাকি দিনগুলো এই গিরিডির বাড়িতেই কাটিয়েছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁর বা বিধুশেখরের যে কী হল তা আর জানা যাচ্ছে না। তবে এমন হতে পারে এই বাড়ির বন্ধ ঘরগুলির মধ্যেই সেই রহস্যের কিনারা রয়ে গিয়েছে। হঠাৎ তাঁর মাথায় বিদ্যুৎ খেলে গেল। ওই অজানা ধাতুর দরজাটাই তার মানে বিধুশেখর, প্রফেসার শঙ্কুর যন্ত্রমানব। মাথার উপরে তিনটে ফুটো বিধুশেখরেরই মুখ আর চোখ। বাপরে! ভালো করে দেখা হয়নি। তাহলে হয়তো হাত-পাও দেখতে পাওয়া যেত।
সুমন্তবাবু একবার মনে মনে নেচে নিলেন। তিনি আজ আর একটা অমূল্য সম্পদের সন্ধান পেয়েছেন। বিধুশেখর। প্রফেসর শঙ্কুর রোবট। যাকে সঙ্গে করে তিনি আশ্চর্য সব অভিযান করেছেন। এই সব অভিযানের অনেকগুলির কথাই কেউ জানে না। বিধুশেখর এই সব অভিযানের একমাত্র সাক্ষী। আর রয়েছে ডায়রিটা। যার মধ্যে রয়েছে প্রফেসর শঙ্কুর আশ্চর্য অভিযানের নানা গল্প। কিন্তু বিধুশেখর কী অবস্থায় আছে কে জানে। তার মেমরি চিপটা প্রফেসর শঙ্কু হারিয়ে ফেলেছেন। তাহলে সামারভিল যেটা পেয়েছেন সেটাই কি সেই মেমরি চিপ?
অনেক ভেবে সুমন্তবাবু সামারভিলকে একটা মেল করলেন। লিখলেন, অনেক দেরিতে হলেও আপনার চিঠির জবাব দিচ্ছি। আমার মনে হয় আমি সেই মাইক্রোচিপের রহস্য বের করতে পেরেছি। আপনি যদি অনুগ্রহ করে চিপটি নিয়ে এদেশে আসেন তবে মনে হয় রহস্য উদ্ঘাটন হতে পারে।
দশ মিনিটের মধ্যেই সামারভিলের জবাব এসে গেল। ধন্যবাদ জানিয়ে লিখেছে, “আমি এখন নেপালে, হিমালয়ের গ্লেসিয়ারের উপর কাজ করছি। চিপটা আমার সঙ্গেই আছে। আমি ঠিক চার দিন পরে কলকাতায় যেতে পারি। আপনি যদি এয়ারপোর্টে আমাকে নিতে আসেন তবে খুব ভালো হয়”।
মনে মনে সামারভিলকে ঠিক যেরকম ভেবেছিলেন সুমন্তবাবু, সেরকম লাগল না। বছর চল্লিশেকের সুদর্শন ভদ্রলোক। ইংরাজি কথার মাঝে মাঝে জার্মান ভাষা ঢুকে যায়। ভাড়া করা গাড়িতে গিরিডি ফেরার সময় অল্প কথায় সুমন্তবাবু প্রফেসর শঙ্কুর একটা পরিচয় দিয়ে দিলেন। শুনে সে বেশ অবাক হল। বলল, “এই রকম একটা রিমোট শহরে এরকম বড় বিজ্ঞানী ছিলেন, এ তো খুব অবাক হওয়ার মতো কথা। তিনি কি সত্যিই রোবট বানিয়েছিলেন যেটা প্রায় মানুষের মতো বুদ্ধি ধরে?”
সুমন্তবাবু বললেন, “চলুন গেলেই দেখতে পাবেন। কিন্তু ওই বাড়িতে আপনার খুব অসুবিধা হবে। থাকার ব্যবস্থা ভালো নয়।”
সামারভিল বলল, “অসুবিধা নেই, আমার অভ্যাস আছে। নেপালের গ্রামে থেকেছি। এটা তো রীতিমতো ভালো বাড়ি একটা।”
সুমন্তবাবু বললেন “এখন একটু বিশ্রাম করুন। সন্ধ্যার সময় আপনাকে ঘরটা দেখাব।”
সারা দুপুর সামারভিল একটুও বিশ্রাম করল না। সারা বাড়ি ঘুরে ঘুরে দেখল। বলল, “স্ট্রেঞ্জ ব্যপার। এখানে নানা রকমের গাছ আছে যেগুলো আমি কোথাও দেখিনি। আচ্ছা প্রফেসর শঙ্কু কিসের প্রফেসর ছিলেন, জানেন কিছু?”
সুমন্তবাবু বিশেষ ভাঙলেন না। বললেন, “মহাকাশবিজ্ঞানী ছিলেন বলেই শুনেছি”।
সন্ধ্যাবেলায় সামারভিলকে নিয়ে সুমন্তবাবু ওই দরজাটার সামনে দাঁড়ালেন। বললেন, “এবার আমাকে চিপটা দিন।”
চিপটা দেখতে সাধারণ মাইক্রোচিপের মতো নয়। গড়নটা অনেকটা নলের মতো। বিধুশেখরের পেটের কাছে তিনটে ফুটোর মধ্যে একটাতে বেশ সুন্দর ঢুকে গেল। দু’জনেই মনে মনে মনে ভাবতে থাকলেন, এইবার নিশ্চয়ই বিধুশেখর নড়ে উঠবে।
দু’জন অনেকক্ষণ এক দৃষ্টিতে ওটার দিকে তাকিয়ে রইলেন। কিন্তু কিছুই ঘটল না। সামারভিল বলল, “বুঝেছি। পাওয়ারের সোর্সটা এখানে নেই। কিংবা পাওয়ারের সুইচটা খুঁজে বের করতে হবে। চলুন চেষ্টা করে দেখি।” সুমন্তবাবু বললেন, “পেটের কাছের বাকি দুটো ফুটো কিসের জন্য। ওদুটোতে একটু খোঁচা দিয়ে দেখলে হয় না?”
পেটের ফুটোদুটো এমন যে ঠিক দুটো আঙুল ঢুকে যায়। সুমন্তবাবু ফুটো দুটোয় আঙুল ঢুকিয়ে একটু চাপ দিতেই একটা খুট শব্দ শুনতে পেলেন। সেইসঙ্গে দেখলেন মাথার কাছের দুটো আলো জ্বলে উঠল। তার মানে সুমন্তবাবুর অনুমান একেবারে ঠিক। এটাই বিধুশেখর। সুমন্তবাবু তাকিয়ে দেখলেন সামারভিলের মুখে নানা রকম ভাবের খেলা চলছে।
মিনিট পাঁচেক পর বিধুশেখরের ধাতব শরীরের ভিতর থেকে একটা গুনগুন শব্দ বেরিয়ে আসতে শুরু করল। তারপর হঠাৎ একটা ঝাঁকুনি দিয়ে দেয়ালের থেকে আলগা হয়ে যে জিনিসটা বেরিয়ে এলো তাকে দেখতে অনেকটা হাত-পাওলা মানুষের মত হলেও, শরীরটা ধাতুর তৈরি। সবটাই চৌকো গড়নের। শুধু মাথাটা ছুঁচলো।
বিধুশেখর একেবারে মানুষের মত হেঁটে ওদের সামনে এসে দাঁড়ালো।
ওদের দেখেই সে এগিয়ে এলো। সামারভিলকে দেখে পরিষ্কার ইংরাজি ভাষায় বলল, “গুড ইভনিং।” সুমন্তবাবুকে দেখে একটু নত হয়ে বলল, “নমস্কার, আমি বিধুশেখর। আপনাদের ধন্যবাদ। কিন্তু এবার আমাকে যেতে হবে।”
সুমন্তবাবু জিজ্ঞাসা করলেন, “কোথায়?”
বিধুশেখর ওর চৌকো হাত তুলে আকাশের দিকে দেখাল। বলল, “প্রফেসর শঙ্কুর কাছে।”
সুমন্তবাবু অবাক হয়ে বললেন, “প্রফেসার শঙ্কু এখন কোথায়?”
বিধুশেখর বলল, “তিনি দশ বছর আগে অন্য এক গ্রহে চলে গিয়েছেন। কিন্তু নিয়মিত আমাকে খবর পাঠিয়েছেন। আমার কন্ট্রোল সিস্টেমের চাবি যে মাইক্রোচিপ, সেটা হারিয়ে গিয়েছিল। তাই প্রফেসর শঙ্কুর কোনও নির্দেশ আমি পালন করতে পারিনি। আপনারা আমার চিপ ফিরিয়ে দিয়েছেন। আমি কৃতজ্ঞ। আজ প্রফেসর শঙ্কুর সব মেসেজ পড়ে তিনি কোথায় আছেন জানতে পেরেছি। তিনি আমাকে তাঁর কাছে যেতে বলছেন।”
এরপর যা ঘটল তা এরা দু’জনেই কোনওদিন কল্পনা করেনি। বিধুশেখর দুম দুম করে পা ফেলে উঠোনের মাঝখানে এসে দাঁড়ালো। তখন আকাশ একেবারে অন্ধকার হয়ে গিয়েছে। আকাশে অসংখ্য তারা জ্বলছে। বিধুশেখর উঠোনের মাঝখানে দাঁড়িয়ে মহাকাশের দিকে দুই হাত তুলে দিল। তার পায়ের তলায় একটা চাপা গর্জন শোনা যেতে লাগল। যেন কোনো মেশিন চলছে। পরক্ষণেই বিধুশেখরের শরীর আস্তে আস্তে শূন্যে ভেসে উঠল। সেটা মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য। পরক্ষণেই প্রচণ্ড বেগে সেই ধাতব শরীরটা আকাশপানে উড়ে চলে গেল। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই সেটা একটা বিন্দুর মতো হয়ে মহাকাশে মিলিয়ে গেল।
শুধু উঠোনের মাঝখানে ছোট্ট একটা গর্ত থেকে সামান্য ধোঁয়া উঠতে লাগল। সঙ্গে একটু পোড়া গন্ধ।
এর পরের খবর অতি সামান্য। সামারভিল একরাশ বিস্ময় নিয়ে নেপালে ফিরে গিয়েছে। সুমন্তবাবু আবার বেহালায় নিজের ঘরে। শুধু সঙ্গে করে ডায়রিটা নিয়ে এসেছেন। ওটা একটা গল্পের আকর। সুমন্তবাবুর লেখার রসদের আর অভাব হবে না।
Tags: কল্পবিজ্ঞান গল্প, গল্প, পঞ্চম বর্ষ প্রথম সংখ্যা, প্রদীপ কুমার সেনগুপ্ত, সৌরভ দে
খারাপ বলবনা তবে কল্পবিশ্বের পাতায় শঙ্কু কে নিয়ে এতো ভালো ভালো লেখা পড়েছি যেগুলোর তুলনায় এটিকে একটু কমা মনে হল। গেদে বাংলায় বলতে গেলে কল্পবিশ্বের একটা আলাদা লেভেল আছে যেটা এই গল্পে মিসিং বলে আমার ব্যক্তিগত ধারণা ।
মোটামুটি ভালোই। শুভকামনা রইল।
ফ্যান ফিকশন হিসেবে উপভোগ করলাম। আশা রাখি যে শঙ্কুর বহুমাত্রিক প্রতিভা নিয়ে পরে আরও নিবিষ্ট লেখা পাব আপনার কাছ থেকে।
আমি এটাকে ঠিক ফ্যান ফিকশন হিসাবে লিখিনি। এখানে প্রফেসার শঙ্কুর কোনো ভূমিকা নেই। বিধুশেখর একটা পার্শচরিত্র মাত্র। পরশুরামের নীলতারা গল্পটিতে শার্লক হোমস ও ওয়াটসন আছেন, কিন্তু সেটি কোনো ফ্যান ফিকশন নয়। এটাও সেরকম। যদি একজন সাধারণ মানুষের জীবনে হঠাৎ বিধুশেখর এসে উপস্থিত হয় তা হলে কী ঘটতে পারে, সেই ভাবনা থেকেই লেখা। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।