ভবিষ্যতের খবর
লেখক: কল্পবিশ্ব
শিল্পী: ইন্টারনেট
একটি কল্পবিশ্ব ইভেন্ট
ভবিষ্যতের খবর
টাইম মেশিনে চড়ে ভবিষ্যৎ থেকে সিদ্ধার্থ ঘোষ চুরি করে এনেছিলেন আগামী দিনের সংবাদপত্রের পাতা এবং সেগুলি প্রকাশিত হয়েছিল ফ্যান্টাস্টিকের পাতায়। এর সাথে ভবিষ্যতের একটি বিখ্যাত পত্রিকার কিছু পাতাও ওনার কাছে এসেছিল, যা অপ্রকাশিতই থেকে গেছিলো। সম্প্রতি আমাদের এক টিমমেম্বার আবিষ্কার করেছে সেই পাতাগুলো। কি আশ্চর্য!! ওগুলো যে কল্পবিশ্বেরই পৃষ্ঠা! আমাদের এইবারের ইভেন্ট এই ভবিষ্যতের খবর নিয়েই।
।। ১ ।।
“ক্লাসিফায়েড বিজ্ঞাপন”
এবার পুজোয় চলুন ওর্ট ক্লাউডের বিলাসবহুল হোটেলে। প্রতিটি পরিবারের জন্যে পৃথক আস্টরয়েডেরও বন্দোবস্ত আছে। আমাদের নতুন অ্যান্টি ম্যাটার ড্রাইভে চালিত প্রথম শ্রেণীর মহাকাশযানে পৌঁছে যান মাত্র দুই দিনে। প্রথম ২৫ জন গ্রাহকের জন্যে সম্পুর্ন বিনামুল্যে সর্ব সময়ের জন্যে মানুষ ভৃত্য। বিশদ বিবরনের জন্যে যোগাযোগ করুন – রি-৩২২ এর সাথে। আমাদের ঠিকানা ৫ নম্বর খাঁদু ওস্তাগর লেন, ৭১১ নম্বর কলকাতা। যে সমস্ত রোবটরা আমাদের সাথে দীর্ঘদিন ভ্রমন করছেন তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
~ দীপ ঘোষ
।। ২ ।।
“ফুটবল বিশ্বকাপে পরপর তিনবার জয়ের হ্যাট্রিক করল ভারত।”
বিশ্বকাপের ইতিহাসে যা আগে কখনো হয়নি তা করে দেখাল ভারত। আর্ন্তগ্রহ বিশ্বকাপে পরপর তিনবার জিতে হিরক কাপ ছিনিয়ে নিল পৃথিবীর এই ক্ষুদ্র উপনিবেশ ভারতবর্ষ। ফাইনালে শনিগ্রহের সালান্ডা উপনিবেশের সাথে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে ভারত ফের একবার জিতে গেল হিরক কাপ। ইতিমধ্যে পরপর তিনবার জেতার জন্য ভারতকে ফুটবল সম্রাট ঘোষণা করে হয়েছে।
খেলার ফল – ফাইনাল
ভারতবর্ষ – ৫ , সালান্ডা – ১
~ সন্তু বাগ
।। ৩ ।।
“আন্দামানে লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড়”
বঙ্গোপসাগরের এক ক্ষুদ্র দ্বীপ আন্দামান বেষ্টনকারী কোরাল রীফ গ্লোবাল ওয়ারমিং এর জন্য ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল আজ থেকে প্রায় পাঁচশ বছর আগে। কিছুদিন আগে এক রোবোডুবুরী সন্ধান পায় একটি নতুন কোরাল রীফের। লক্ষ লক্ষ পর্যটক ভীড় জমিয়েছেন সেই রীফ পরিদর্শনে।
~ অঙ্কিতা মাইতি
।। ৪ ।।
আমার মায়ের অনেক কাজ। সকালে অঙ্কের দিদিমণি, দুপুরে ক্লাসিকাল মিউজিকের ক্লাস। সন্ধেবেলা রান্না। একটা মাথায় হয়?
মুণ্ডম ইনক নিয়ে এল আধুনিক নারীর মাল্টিরোল জীবনের উপযোগী মাল্টিপারপাস হেডচেঞ্জার এপ্লায়েন্স।
বিজ্ঞান, শিল্প ও গৃহবধু তিনটি রোলের জন্য এখন প্রয়োজনমত মাথা বদলে নিন। সহজে প্রতিস্থাপনযোগ্য বিজ্ঞান, শিল্প ও গৃহবধু মস্তিষ্কের স্পেশালাইজড প্লাগ এন্ড প্লে থ্রি ব্রেন প্যাক। সন্তান, শ্বশুর ও স্বামীর ১০০ শতাংশ তৃপ্তি।
আদর্শ নারীর আদর্শ উপহার- মুণ্ডম ট্রাইহেড।
আপনার পুরোন মাথাটি নিয়ে আসুন ও আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট পান।
~ দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য
।। ৫ ।।
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা, ৪ জুলাই: ঠিক এটাই তো হওয়ার ছিল। ব্যাট হাতে ‘৯৮-এর শারজায় অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে জোড়া শতরানকারী সেরা ফর্মের শচীন আর ‘৯৭-এর টরন্টোর অপ্রতিরোধ্য সৌরভ ওপেন করতে নামলে সর্বকালের সেরা বিশ্ব একাদশও যে পাত্তা পাবে না এটা অনেকেই বলেছিলেন। খাতায় কলমে যা ভাবা গেছিল ঠিক সেটাই হল। অথচ প্রথমে ব্যাট করতে নেমে যখন সাতের দশকের শেষদিকের গর্ডন গ্রিনিজ আর টেস্টে প্রথম চারশো রান করার সময়ের ব্রায়ান লারা ব্যাটে ঝড় তুললেন কিংবা পরে নেমে ‘৭৯ বিশ্বকাপ ফাইনালের ভিভ রিচার্ডস বা গোল্ডেন জুবিলি টেস্টের বথামরা ঝোড়ো ব্যাটিং-এ ইডেন মাতাচ্ছিলেন, তখন সত্যিই ভাবা যায়নি দিনের শেষে শেষ হাসিটা ভারতই হাসবে। আগে থেকেই বিরাট কালোবাজারি চলছিল ম্যাচ ঘিরে। শেষ পর্যন্ত ভার্চুয়াল গ্যালারিতে ৪ কোটি পাঁচ লক্ষের বেশি সিটের বেশি দর্শকের ব্যবস্থা করা যায়নি। মুখ্যমন্ত্রী পরের ম্যাচের আগেই দর্শক আসন অন্তত দশ কোটি করার কথা জানিয়েছেন। তবে জায়ান্ট স্ক্রিনে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে খেলা দেখানো হয়। বহুদিন বাদে প্রিয় শচীন-সৌরভকে খেলতে দেখে ক্রিকেটপ্রেমীরা ঠাকুরদার ঠাকুরদার আমলের দুই কিংবদন্তিকে নিয়ে আপ্লুত হন। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে অভিষেক টেস্টে শতরান করা রনজি সাহেব মঞ্চে উঠতেই দর্শকদের মধ্যে পাগলামি চরমে ওঠে।
শচীন-রনজিকে পাশাপাশি দাঁড়াতে দেখে গ্যালারিতে যে গর্জন উঠল, তা থেকে পরিষ্কার এরপর শুরু হতে চলা টেস্টে যখন ‘৭১-এর ক্যারিবিয়ান সফরের সুনীল গাভাসকার আর ‘৩২-এর ইংল্যান্ড সিরিজের স্যার ডন ব্রাডম্যান টস করতে নামবেন তখনও পাগলামি চরমে উঠবে।
খেলার স্কোর (সংক্ষিপ্ত)
বিশ্ব একাদশ (৫০ ওভারে) ৪৫৬/৫ (লারা ১৮৩, রিচার্ডস ১১৮, কপিল ৩৪/৩)
ভারত (৪৬.২ ওভারে) ৪৫৭/০ (শচীন ২৫৬*, সৌরভ ১৮৮*)
~ বিশ্বদীপ দে
।। ৬ ।।
আনন্দবাজার পত্রিকা – ১৪ ভাদ্র, সন ১৫১৩
প্রবল বিরোধীতায় বন্ধ “ভুতের রাজা” ট্রান্সপোর্ট
আজ বন্ধ হয়ে গেল প্রভূত আলোড়ন তোলা “ভুতের রাজা ট্রান্সপোর্ট এজেন্সী” – প্রচুর জনগুঁতুনি এবং বিরুদ্ধমতে জেরবার মালিক তালিবাহন সেন বাধ্য হয়ে এটি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন।
গত পাঁচ বছরের মধ্যেই হিউম্যান ট্রান্সপোর্টেশন ব্যাবসায় ঝড় তোলা এই এজেন্সি চালু হয়েছিল বর্তমান মালিক তালিবাহন সেনের বাবা যানবাহন সেনের আমলে। বিজ্ঞানী যানবাহন সেন সাধারন মানুষকে বাস ট্রামের গুঁতো থেকে রক্ষা করতে “ভুতের রাজা” জুতো এবং “জয়মাল্য” লকেট আবিষ্কার করেন। এই লকেট পরে জুতোতে পা গলিয়ে নিজের গালে চড় মেরে জায়গার নাম বললে সেকেন্ডের ভগ্নাংশে টেলিপোর্টিঙের মাধ্যমে উক্ত স্থানে পৌঁছে যাওয়া যায়। ক’দিনের মধ্যে ব্যাপারটি খুবই জনপ্রিয় হয়ে পড়ে এবং যানবাহনবাবু তার পেটেন্ট নিয়ে জোরকদমে লেগে পড়েন জুতো এবং মালা তৈরীতে। যানবাহনের খ্যাতি যখন শিখরে, শিল্প মন্ত্রীর শ্যেনদৃষ্টি অচিরেই গিয়ে পড়ে তাঁর ওপর। কর্মক্ষমতা বাড়াতে তিনি যানবাহন সেন-কে উপদেশ দেন, অফিসে এই জিনিসের বহুল ব্যবহারের জন্য।
তারপর থেকে এই রাজ্যের যে কোন অফিসে যোগ দিলেই তাকে একটি মালা এবং জুতো ধরিয়ে দেওয়া হতো। সেটি অফিসের জিপিএসের সাথে সিনক্রোনাইজ করা থাকত। বাড়িতে খেয়ে দেয়ে একটা পান মুখে নিয়ে, গিন্নিকে এবং সন্তানকে হামি খেয়ে জুতোয় পা গলিয়ে ব্যাগ কাঁধে নিয়ে গালে চড় মেরে অফিসের নাম বললেই সোজা অফিসে হাজির। ট্রেন বাস ট্রামের ঝামেলা নেই, জ্যাম নেই – এ এক দারুন মজা। এদিকে অফিস থেকে বেরিয়ে টুক করে বাসে চেপে ট্যাক্সির ভাড়া লেখার দিন শেষ। সব অফিসের সাথে এই ডিভাইস সিনক্রোনাইজ করা আছে – কোন অফিস থেকে কোন অফিসে যেতে হলে গালে চড়চাপড় মারলেই হবে – কোন একস্ট্রা টাকা খরচ নেই। বাগাড়িয়া, মিত্তাল, রাহেজা, বিড়লা, নেওটিয়ার মত ভিনদেশি শিল্পপতিরা মহাখুশি। এদিকে যাওনবাহন সেনও কায়দামত বঙ্গবিভূষন বাগিয়ে নিলেন।
ঝামেলা শুরু হল এর পরপরই। বাস ট্রামগুলো প্রেম করার আদর্শ জায়গা হয়ে উঠেছিলো – কারন অফিসটাইমেই যারা চলতে চাইত না, তারা তো এখন প্রায় ফুটপাতে দাঁড়িয়ে পড়ে আর কি! অফিসের সামনে খাবার দোকানগুলো উঠেই গেছে প্রায়। কারন দরকার পড়লেই চড় মেরে বাড়ি, সেখানে খাওয়া সেরে আবার এক চড়ে পুনরায় অফিসে নিজের ডেস্কে। তার ওপর অফিসগুলোতে অ্যাটেন্ডেসের ব্যাপারাটা হয়ে গেল ঝামেলার – কয়েক সেকেন্ড দেরী হলেই লালদাগ। এদিকে রাঙ্ক অনুযায়ী যন্ত্রের রকমফের হওয়াতে, সাধারন কর্মীদের যন্ত্রে বেশি গোলোযোগ হতে লাগল! অনেকে অভিযোগ করল মেশিন অনেক সময় সাত চড়েও রা কাড়ছে না। চড় মেরে মেরে গাল লাল করেও অনেকে সময়মতো অফিস পৌঁছতে পারেননি। অনেকে নিজের অফিসের জায়গায় অন্য অফিসে পৌঁছে যাচ্ছিলেন – আবার জায়গা বদলাবদলি হয়ে কাজের জায়গার বদলে বাথরুমে ঢুকে পড়ে কেলোর কীর্তি বাধাচ্ছিলেন। বাস ট্রামের কর্মীরা আন্দোলনে নেমে পড়েন অচিরেই – রাস্তাঘাট ব্যবহার না হয়ে হয়ে তার হাল খারাপ। রাজনৈতিক দলগুলি নানা ইস্যুতে রাস্তা অবরোধ করতে না পেরে বেজায় ফাঁপড়ে পড়ে গিয়েছিলো। কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছিলো কাজে অকাজে বসেরা যখন তখন অফিসে ডেকে নিতো বলে। তারপর ট্রাভেল অ্যালাউন্সের নামে উপরি পাওনা হাওয়া – কাঁহাতক আর এসব সহ্য করা যায়? তার ওপর অশীতিপর যানবাহন সেনের সুযোগ্য পুত্র এবং বিজনেস পার্টনার তালিবাহন সেন তালি দিয়ে ভিনরাজ্যে যাওয়া আসার পথ সুগম করতে চলেছেন এরকম একটি কানাঘুষো কানে আসতেই আগুনে ঘৃতাহুতি ঘটে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ প্লাকার্ড হাতে “ভুতের রাজা” এজেন্সির অফিসের নীচে জড়ো হন।
গত সাতদিনের জন অনশনে গণধিকৃত হয়ে, তালিবাহন শেষ অবধি রনে ভঙ্গ দেন। তিনি দুঃখ করে বলেছেন “দেশে আবার প্রস্তর যুগ শুরু হল।” কিন্তু এই আনন্দে সমস্ত বাস ট্রেনের মালিক, চালক সকলে মিলে গণউৎসবের ডাক দিয়েছেন – এবং ঘোষনা করেছেন আগামী মহালয়ার দিন থেকে পুরোদমে রাস্তায় বেরোবে বাস ট্রাম – সকালে সেজে উঠবে অফিসপাড়া।
~ সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়
।। ৭ ।।
বিজ্ঞাপন! বিজ্ঞাপন! বিজ্ঞাপন!
বিজ্ঞাপন দেওয়ার একটি অতি উন্নত ব্যবস্থা আমরা এনেছি। আমাদের উদ্ভাবন যুগান্তকারী। আমরা গন্ধের কোডিং করেছি। একটা গন্ধ পাবেন, সঙ্গে সঙ্গে বিজ্ঞাপন আপনার মাথায় সঞ্চারিত হবে। একটা অত্যন্ত জটিল নিউরো-ট্র্যান্সমিটারের সাহায্যে এটা আমরা সম্ভব করেছি। আপনি যদি চপ কাটলেট পেঁয়াজি বেগুনি ইত্যাদির বিক্রেতা হন, বা খিচুড়ি ইলিশমাছের দোকান দেন, আপনার রান্নাটা করতে থাকুন, এটাই কাফি। গন্ধ নিজে গিয়ে সুড়সুড়ি দেবে সম্ভাব্য ক্রেতার ঘ্রাণেন্দ্রিয়ে এবং তা থেকে তার মগজে চলে যাবে আপনার বিক্রীত পদার্থের বিজ্ঞাপন। তিনি ছুটে আসবেন আপনার দোকানে/ স্টলে। হু হু করে বিক্রি হয়ে যাবে খাবার। টাকাটা শুধু আমাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দিয়ে দেবেন। ইনবক্সে যোগাযোগ প্রার্থনীয়।
~ যশোধরা রায়চৌধুরী
।। ৮ ।।
বিজ্ঞান’এর বিশেষ ক্রোড়পত্র থেকে…
প্রমিথিউসের মা
————————-
সর্বোচ্চ বিজ্ঞান পরিষদের তরফে মহা পরিচালক রুহু এক সাংবাদিক সম্মেলনে পরিষদের সাম্প্রতিকতম উদ্যোগের ব্যর্থতার কথা ঘোষণা করলেন।
ইতিহাসের সর্বকালীন সেরা আবিষ্কার হিসেবে তাঁরা আগুন আবিষ্কারকে চিহ্নিত করেছেন। প্রাপ্য পুরস্কার গ্যালাকটিক স্পেস টাইম মেডেল দিয়ে আবিষ্কারক বিজ্ঞানী বা বিজ্ঞানীদের গ্রুপকে সম্মানিত করার জন্য সময়যানে করে বিখ্যাত মহিলা সময় পরিব্রাজক লুসি আর পুরুষ অভিযাত্রী সোহাকে সুদূর অতীতে পাঠানো হয়।
সেই সময়যান ফিরে এসেছে। সোহা একলা ফিরেছেন। তাঁর কাছে প্রাপ্য তথ্য অনুযায়ী ব্যাপক অনুসন্ধানের পরও অভিযাত্রীরা কোনও একক মানুষ বা গোষ্ঠীকে আবিষ্কারক হিসেবে চিহ্নিত করতে পারেন নি। বিরাট কালখণ্ড জুড়ে কেউ আগ্নেয়গিরির জ্বলন্ত লাভা থেকে কেউ দাবানলের থেকে আগুন সংগ্রহ আর সংরক্ষণ করেছে। পাথরে পাথর ঘষে আগুন উৎপাদন থেকে দিয়াশলাই লাইটার ইত্যাদি বিবিধ উপকরণে বিস্তৃত এই অগ্নিসংক্রান্ত মাইক্রো সায়েন্সএর বিশাল ইতিহাস।
প্রাথমিক ব্যর্থতার পর অভিযাত্রীরা আগুনের প্রতি মানুষের মুগ্ধতার উৎস অনুসন্ধানে আরও অতীতে সময়যানকে চালিত করেন।
আদিম আফ্রিকার এক মনুষ্য গোষ্ঠীর মধ্যে সেই মুগ্ধতার প্রথম উন্মেষ পাওয়া গেলে, অভিযাত্রীরা অনুসন্ধানে ক্ষান্তি দেন। কিন্তু অভিযানের নেত্রী লুসি সিদ্ধান্ত নেন নিছক মেডেল নয়, পুরস্কার হিসেবে এদের প্রাপ্য উন্নততর জিন ।
সেই অনুযায়ী তিনি সেই আদিম পিতাদের সাথে মিলিত হয়ে প্রাচীন পদ্ধতিতে উন্নততর জিন সমৃদ্ধ পরবর্তী প্রজন্ম তৈরির জন্য সেই সময়েই থেকে গিয়েছেন। প্রসঙ্গত , বর্তমানের প্রচলিত রাষ্ট্রীয় কম্পিউটার-নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র-গর্ভে সন্তান উৎপাদনের বদলে প্রাচীন মাতৃগর্ভে সন্তান লাভের রোমান্টিক অবসেশনের জন্য লুসির চিকিৎসা চলছিল।
সময় পরিব্রাজক লুসি না ফেরায় রুহু বিজ্ঞান পরিষদের তরফে আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেন।
দুঃখ প্রকাশের সময় মহা পরিচালকের মুখে রহস্যজনক হাসি ভেসে ওঠায় সাংবাদিকদের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে।
~ অরুণাচল দত্তচৌধুরী
।। ৯ ।।
|| এ অনন্ত চরাচরে ||
[ধারাবাহিক অনুপ্রবন্ধ]
অবশেষে মানব সভ্যতার অন্যতম শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার এখন আমজনতার দরবারে। এসে গেল ‘কোয়ান্টাম চুর্ণ’। যারা ইন্টারগ্যালাক্সিতে হাইপারডাইভ দেন সেইসব যাত্রীগণের জন্য বানানো হল এমন এক খাদ্যচুর্ণ যার প্রভাবে এক বছর কোন ক্ষিধে থাকবে না। এই চুর্ণ কোয়ান্টাম কণা দ্বারা তৈরী এক জটিল জৈব-রাসায়নিক পদার্থ। এতদিন মানুষকে বিমানে কিছুদিন অন্তর অন্তর জেগে উঠে খাবার খাওয়ার পাশাপাশি যে বর্জ পরিত্যাগ করতে হত তাতে মহাকাশ দূষণের একটা বড় আশঙ্কা শুরু করেছিলেন পরিবেশবিদরা। এবার তার সমস্যার সমাধান। এ’কবছর ধরে মহাকাশযাত্রীদের (মূলত বিজ্ঞানী এবং সেনা) ওপর পরীক্ষা করা হয়েছিল। পরীক্ষাটি সফলভাবে সমাপ্ত হওয়ার পর এবার সাধারণ যাত্রীদের জন্য আনা হল এই খাদ্যচুর্ণটি। যারা অন্যান্য নক্ষত্রপুঞ্জে নিজেদের বাড়ী করেছেন বা যাদের আত্মীয়েরা থাকেন, বা যাদের অন্যান্য গ্যালাক্সীতে মানবশিল্পবিপ্লব আনার জন্য বানিজ্যে যাত্রা করছেন, সেইসব সাধারণ যাত্রী, শিল্পপতি ও কর্মচারীদের সুবিধা আরোও বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য আমাদের বিজ্ঞানীরা যারপরনাই আনন্দিত। কল্পবিশ্বের রিপোর্টার অবলোকিতেশ্বর বুদ্ধ’কে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আপাতত এই চূর্ণ শুধুমাত্র ইন্টারগ্যালাকটিক যাত্রীদের জন্যই ব্যবহার করা হবে। ঘুমানোর সময় BMR হ্রাস পাওয়ায় এই চূর্ণের কার্যকরিতা কারো কারো ক্ষেত্রে আরোও বেশিদিন প্রযোজ্য হচ্ছে। আপাতত এর শিল্প উৎপাদন ব্যায়সাপেক্ষ হওয়ার দরুন এর ব্যবহার কেবলমাত্র এই বিশেষ যাত্রীদের জন্যই বানানো হচ্ছে। তবে বিজ্ঞানীদের এর পরের লক্ষ্য এর ব্যাপক উৎপাদন ও সাধারণের জন্য ব্যবহার। প্রাকৃতিক খাদ্য উৎপাদন পৃথিবীতে বহুযুগ আগেই শেষ হয়ে যাওয়ার দরুন যে সিন্থেটিক খাবার খেয়ে আমাদের থাকতে হয় তার পরিমাণও আস্তে আস্তে জনসংখ্যা বিস্ফোরণের দরুন সংকটজনক অবস্থায় এসে পৌছেছে। আশেপাশের গ্রহ ও উপগ্রহে জনবসতি স্থাপন করেও এই সমস্যার সমাধান করা যায়নি। এই যুগান্তকারী আবিষ্কারের পর, আশা করা যাচ্ছে, এই জনবিস্ফোরণে যে খাদ্যসঙ্কট দেখা দিতে চলেছে, তার মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। আমরা এখন সেই দিকেই তাকিয়ে আছি।
~ সুমন দাস
।। ১০ ।।
স্লিপ চিপ
এই রোজকার জীবনের লড়াইতে এক মূহুর্ত সময় নেই থামার। কিন্তু আমাদের শরীর এত ধকল সহ্য করবে কেন। সে ক্লান্ত হয়ে পড়ে, ছুটি চায়। আমরা নিজেদের অজান্তেই কখন ঘুমিয়ে পড়ি বুঝতেও পারি না। ফলস্বরুপ প্রয়োজনীয় সময় নষ্ট। এবার সেই সমস্যার সমাধানে এসে গেল “স্লিপ চিপ”। এই চিপ নিজের মাথায় একবার পরে নিলে শরীরের ক্লান্তি ভাব আপনি দূরে পাঠাতে পারবেন। আর সেই সাথে খুঁজে পাবেন স্ফুর্তি, উৎসাহ, উদ্দীপনাযুক্ত এক অন্য মানুষকে। “স্লিপ চিপ” মার্স, জুপিটার, জুনোর পর এবার পৃথিবীতেও উপলব্ধ।
বিঃ দ্রঃ-কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই।