সম্পাদকীয়
লেখক: কল্পবিশ্ব সম্পাদকমণ্ডলী
শিল্পী: দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য (চিত্রচোর)
প্রিয় পাঠক, এসে পড়ল কল্পবিশ্বের দ্বিতীয় সংখ্যা।
প্রথমেই জানাই, আমাদের প্রথম সংখ্যা যে এত মানুষের ভালোবাসা পাবে তা সত্যিই অভাবনীয় ছিল আমাদের কাছে। সাধারণ পাঠক থেকে প্রথিতযশা সাহিত্যিকেরা, সকলেই সাদরে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন কল্পবিশ্বকে। এই ভালোবাসা ও উৎসাহ নিশ্চিতভাবে বিপুল অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে আমাদের। অনেক আশা ও স্বপ্ন নিয়ে এবার দ্বিতীয় সংখ্যা নিয়ে হাজির আমরা।
আমাদের এবারের প্রচ্ছদকাহিনী এক বিপুল জনপ্রিয় বিষয়কে নিয়ে। এই মুহূর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে বিখ্যাত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং-এর মতে, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের কারণেই নাকি বিলুপ্তি ঘটবে মানব সভ্যতার! কেননা যন্ত্রের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে মানুষ মোটেই এঁটে উঠতে পারবে না। তাঁর সঙ্গে সহমত হয়েছেন আরও অনেক বিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদরা। আবার ব্রিটিশ বিজ্ঞানী রোলো ক্রিপেন্টার জানিয়েছেন অন্য কথা। তাঁর মতে, যন্ত্র আমাদের থেকে বেশি বুদ্ধিমান হলে তারা আমাদের জন্য খুলে দিতে পারে অসীম সম্ভাবনার দরজা। এই প্রবল চর্চিত বিষয়টিই এবার কল্পবিশ্বের প্রচ্ছদকাহিনী।
এছাড়াও এই সংখ্যার অন্যতম আকর্ষণ প্রয়াত লেখক সিদ্ধার্থ ঘোষের একটি অসামান্য প্রবন্ধ। কালের অতলে একরকম হারিয়েই গিয়েছিল লেখাটি। তিরিশ বছরেরও আগে প্রকাশিত লেখাটি আবার পুনর্মুদ্রিত হল। সায়েন্স ফিকশনের একনিষ্ঠ পাঠকদের কাছে এ লেখা আজও সদ্য-নির্মিত হট কেকের মতোই সুস্বাদু মনে হবে, এ আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।
আমরা দারুণ আনন্দিত অকাল-প্রয়াত সাহিত্যিক দিলীপ রায়চৌধুরীর হারিয়ে যাওয়া অসাধারণ একটি গল্পকে ফিরে পেয়েও। কেবল লেখাটিই নয়, লেখকের সুযোগ্যা কন্যা কবি ও ঔপন্যাসিক যশোধরা রায়চৌধুরী লিখেছেন একটি মর্মস্পর্শী স্মৃতিচারণ। এই স্মৃতিচারণ ও গল্পটির জন্যে যশোধরাদির কাছে আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।
এক নিরিবিলি দুপুরে আমরা মুখোমুখি হয়েছিলাম বাংলা কল্পবিজ্ঞানের দুই প্রথিতযশা সাহিত্যিক অনীশ দেব ও সৈকত মুখোপাধ্যায়ের। কেমন করে নতুনরা কল্পবিজ্ঞান লিখবেন এই নিয়েই শুরু হয়েছিল আলোচনা। তারপর আলোচনা ডালপালা ছড়িয়েছিল বহুদূর। সেই আড্ডাও রইল এই সংখ্যায়। হবু সাহিত্যিক বা মগ্ন পাঠক দুজনেই চিন্তার প্রভূত খোরাক পাবেন এই আড্ডায় শরিক হয়ে, সন্দেহ নেই।
ফেসবুকে আমাদের ‘কল্পবিজ্ঞান’ গ্রুপে আমরা আহ্বান করেছিলাম কল্পবিজ্ঞানের লিমেরিকের। সেখান থেকে বাছাই করা সেরা লেখাগুলি রইল এই সংখ্যায়। ছন্দ ও কল্পনার অভূতপূর্ব সব পার্টনারশিপ পাঠককে চমকে দেবেই।
এবারে আমরা জোর দিয়েছি অনুবাদ সাহিত্যের উপর। থাকছে এডমন্ড হ্যামিল্টনের ‘ডোর ইনটু ইনফিনিটি’, ফিলিপ কে ডিকের ‘হ্যাঙ্গিং স্ট্রেঞ্জার’ আর আসিমভের ‘নাইটফল’ এর অনুবাদ। উপন্যাস সম দুটি অনুবাদের জন্যে আমরা কৃতজ্ঞ মল্লিকা ধর আর সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের কাছে।
এছাড়াও রইল একগুচ্ছ প্রবন্ধ, গল্প, কার্টুন আরও অনেক অনেক কিছু।
প্রিয় পাঠক, আসুন গড়ে তুলি এক কল্পনার পৃথিবী।
ভালো থাকবেন সবাই।
Tags: কল্পবিশ্ব সম্পাদকমণ্ডলী, দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য (চিত্রচোর), প্রথম বর্ষ দ্বিতীয় সংখ্যা, সম্পাদকীয়