সিঁড়ি
হরিহর হাজরা সদ্য সরকারী চাকরী থেকে অবসর নিয়েছেন। বছর তিন আগে স্ত্রী গত হয়েছেন। নিঃসন্তান হরিহর বাবুর কোন নিকট আত্মীয়স্বজন নেই। অল্পবয়সে বাবা মা মারা যাওয়ার পর দাদুর কাছে মানুষ হয়েছেন। দাদুও বহুদিন হল গত হয়েছেন। দূর সম্পর্কের এক ভাইপো আছে। আসামে থাকে, মাঝে মাঝে খোঁজ নেয়। তাই হরিহর বাবুর ঝাড়া হাত পা। বই পড়া ও নাটক দেখার অভ্যেস আছে তাই সময় [আরো পড়ুন]
Read More
টাইম মেশিন
হাসছে তারা। কেউ কেউ খুশিতে গলা ছেড়ে নানান রকম অঙ্গভঙ্গি করতে করতে গান করছে। কেউ হাত পা ছাড়িয়ে নাচছে। সবার মুখ খশিতে ঝলমল করছে। আর করবে নাই বা কেন? যে ইতিহাস তারা শুধুমাত্র ডিজি-বুকে পড়ে, আজ তারা সেখান থেকে ঘুরে এসেছে। আজ তারা অতীত ভ্রমণ করেছে। নিঃসন্দেহে ৩৫৫৬ সালের সব থেকে বড় আবিষ্কার এই টাইম মেশিনের আবিষ্কার। তবে সেইসঙ্গে সময় ভ্রমনের [আরো পড়ুন]
Read More
বানভাসি
(洪水Kouzui)
অনেকদিন আগের বা সুদূর ভবিষ্যতের কথা (পাঠকের যা মর্জি ভেবে নিন), এক সৎ, কপর্দকহীন কিন্তু জ্ঞানী ভবঘুরে মহাবিশ্বের রহস্য উদ্ঘাটনের উচ্চাশায় একটা নদীর ধারে নতুন গড়ে ওঠা নীলচে রঙের লঙ্গরখানার ছাদে টেলিস্কোপ বাগিয়ে বসল। স্বাভাবিক ভাবেই টেলিস্কোপে চোখ লাগিয়ে কিছু গোদা গোদা নুড়ি পাথরের অর্থহীন ছোটাছুটি আর হরতাল বা অবরোধে আটকানো ট্রেনের [আরো পড়ুন]
Read More
অকাল তমসা (অন্তিম পর্ব)
[প্রথম পর্ব পড়বার জন্য এখানে ক্লিক করুন]
[দ্বিতীয় পর্ব পড়বার জন্যে এখানে ক্লিক করুন]
পর্ব-৩
মানবসভ্যতার ইতিহাস সম্পর্কে আমি যা যা পড়লাম এখনকার যেকোনো তথাকথিত পণ্ডিতের মাথা ঘুরিয়ে দেবার পক্ষে যথেষ্ট। বেশিরভাগই হায়ারোগ্লিফিকে লেখা থাকলেও আমি সেগুলো বুঝতে পেরেছিলাম ড্রোনিং মেশিনের সাহায্যে। তবে অন্যান্য বেশ কিছু খণ্ড এমন বিটকেল ভাষায় [আরো পড়ুন]
Read More
জীবনদাতা
১৪ই এপ্রিল, ৩০১৬:
আজ অনেকদিন পর আমার মায়ের সঙ্গে খেলতে এলাম পার্কে। তোমরা জিজ্ঞেস করতেই পারো, অনেকদিন পরে কেন? আমার মতন দশ বছরের বাচ্চার তো রোজই পার্কে আসা উচিৎ, তাই না? আসলে মা আমাকে নিয়ে আসতে লজ্জা পায়, তাই আর রোজ আসা হয় না। মা অবশ্য মুখে কিছু বলে না, বলতে পারার কথাও নয়। কিন্তু আমি সব বুঝতে পারি, তাই তো মা বলে আমার হেবি ব্রেইন, কোনও ইনডিউসড ইন্টেলিজেন্স [আরো পড়ুন]
Read More
ব্লু
যেহেতু পায়ের নিচে মেঝেটা সরু একফালি সাদা লিনোলিয়ামের স্ট্রিপ মাত্র, আর ধবধবে সাদা দেওয়ালটাই অর্ধবৃত্তাকারে বাঁক নিয়ে মাথার ওপরে ছাদ হয়ে গেছে, তাই রয়ের মনে হচ্ছিল, ও যেন একটা টানেলের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
সামনে পড়ে ছিল নিরাপত্তা রক্ষীটির শরীর। হাতে ব্লাস্টার থাকলেও মৃত্যুকে সে ঠেকাতে পারেনি। শুধু তাই নয়, তার যন্ত্রণায় বিকৃত হয়ে যাওয়া মুখটা দেখে, ক’বছরের [আরো পড়ুন]
Read More
সবুজ মানুষ
“চুলে কি রঙ করেছ?”
সাতসকালে গিন্নির প্রশ্নটা শুনে শ্যামলবাবুর মেজাজ গেল সপ্তমে চড়ে। শ্যামলবাবুরা বংশানুক্রমে টাকের ধারক ও বাহক। মাত্র বত্রিশ বছর বয়সেই চকচক করছে জটায়ুর মতো মাথাজোড়া টাক। ঘাড় ও কানের ওপর যে ক’গাছা চুল বিশ্বাসঘাতকের মতো টিমটিম করছে সেগুলি নিয়েই সকাল সন্ধ্যে ঝাড়া কুড়ি মিনিট সময় অতিবাহিত করেন। কানের ওপরের চুল দৈর্ঘ্যে ফুটখানেকের [আরো পড়ুন]
Read More
বহ্ন্শোয়াইগা অ্যাল্পট্হম
গতকাল জিনিসটা মোটা টাকার বিনিময়ে তুলে দিয়েছি মিঃ রঘুনাথান-এর হাতে। সেটি কি জিনিস তা সমঝদার কেউ শুনলে হয় আমাকে পাগল ভাববে নতুবা শুধুই এক শখের কালেক্টর ভেবে নেবে যে কিনা এরকম একটি দুষ্প্রাপ্য, দুর্মূল্য জিনিসের কদর করতে শেখেনি। ভালো দাম পেয়েছি কি বেচে দিয়েছি! আসলে এরকম একটি ‘অ্যান্টিক আইটেম’ নিজের সংগ্রহে রাখার আগে সে সম্বন্ধে যে বেশ খানিকটা [আরো পড়ুন]
Read More
বিকল্প
তার মনে হলো সে হয়ত পথ হারিয়েছে। এতক্ষন ধরে সে নির্দেশিত পথেই চলছিল, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে যে ল্যান্ডমার্কটার কথা তাকে বলা হয়েছিল, সেটা পেরিয়ে এসেছে ভুলে। এই ঘিঞ্জি জায়গায় বেশ কিছুক্ষন এদিক ওদিক করার পর, সে বিরক্ত হয়ে হাল ছেড়ে দিল।
আচ্ছা – এই নোংরা প্যাঁচালো গলিঘুঁজি ছেড়ে বড় রাস্তায় উঠে আবার সেখান থেকে খোঁজ শুরু করলে কেমন হয়? ব্যাপারটা কেঁচে গণ্ডুষ হয়ে [আরো পড়ুন]
Read More
অস্তিত্ব-বর্ণ
দীর্ঘ দুমাস নিস্তরঙ্গ ভাবে ভেসে আসা বিষ্ণুবাহন-৫ মহাকাশযানটা অবশেষে একটা মৃদুস্পন্দন তুলে হঠাৎ যেন জেগে উঠল। যানের যাত্রী পাঁচজন কিন্তু ইতিমধ্যেই উত্তেজনায় সজাগ। ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক অভিযানের শরিক এই পাঁচজন। ক্রমশ মহাকাশযানের গতিবেগ কমে এল আর মহাকাশযানের স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা তার গতিপথ সংশোধন করে তাদের গন্তব্যের [আরো পড়ুন]
Read More
পৈশাচিক খিদে
কোন কারণ নেই।
কেন সবসময় কারণ থাকতেই হবে? মানুষ শুধু কারণ খোঁজে, কিন্তু আসল কারণ গুলোর পেছনের যুক্তিকে কখনোই ব্যাখ্যা করা যায় না। এই যে মানুষের সমস্ত জীবন কেন এরকম? কেন শুধু এইভাবেই চলে, অন্য কোনভাবে কেন নয়?
এই ধরনের প্রশ্নকে কি কেউ কোনদিন ব্যাখ্যা করতে পেরেছে?
****
প্রচন্ড আক্রোশে দাঁতে দাঁত চেপে জানলার বাইরে তাকিয়ে মানুষটা ঠায় দাঁড়িয়ে রইল। কখনো [আরো পড়ুন]
Read More
চন্দ্রকুমারী
জাপানের এই উপকথাটা খুব আশ্চর্যরকমের সুন্দর। অনেকে বলে থাকেন আধুনিক কল্পবিজ্ঞানের গল্পের আদিরূপ এই উপকথাতেই প্রথম পাওয়া যায়। অনেকে আরো বলেন, উপন্যাস ইত্যাদির বীজও লুকোনো ছিল এই উপকথায়।
এক দেশে এক গরীব কাঠুরিয়া থাকতো। গ্রামপ্রান্তের ছোটো এক কুটিরে কাঠুরিয়া আর তার স্ত্রী বাস করতো। সকালবেলা দু’টি খেয়ে নিয়ে কাঠুরিয়া নিজের কুড়ুলটি আর ঝোলাটি নিয়ে [আরো পড়ুন]
Read More
ঈশ্বরের বাগান
অনেক দূর থেকে আমার নাম ধরে কে যেন ডাকছে। চোখ খোলবার জন্য রীতিমতো লড়াই করতে হল সারাদিনের কঠোর পরিশ্রমের পর কাঁচা ঘুমের চোরাবালিতে ডুবে যেতে থাকা চেতনাকে টেনে আনতে।
তারার চাঁদোয়ার তলায় গাছের ডালে বাঁধা হ্যামকে আমি কোন কারণে শুয়ে আছি এটা মনে আসতে অবশ্য সেকেন্ড খানিকের বেশি লাগল না।
সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারলাম পাশের ডালে বাঁধা হ্যামক থেকে চাপা গলায় আমার নাম [আরো পড়ুন]
Read More
কবর
যে বন্দী দশায় বসে আছি তাতে এই অদ্ভুত কাহিনী লিখতে আমার বেশ ভয় লাগছে। জানি এ লেখা পড়ার পর আমার মানসিক সুস্থতা নিয়ে আরও প্রশ্ন উঠবে। মানুষের দুর্ভাগ্য এই যে তার পক্ষে জাগতিক দুনিয়ার বেশি কিছু প্রত্যক্ষ করা সম্ভব নয়, আর আমার দুর্ভাগ্য হল আমার পক্ষে সেটা প্রত্যক্ষ করা সম্ভব হলেও বাকিদের তার সাথে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা প্রায় নেই বললেই চলে। আমার [আরো পড়ুন]
Read More
শেষ প্রশ্ন
[আইজাক আসিমভের “The Last Question ” গল্পটি পড়ে অবাক হয়ে গেলাম! আশ্চর্য সুন্দর কল্পবিজ্ঞান। ভাবলাম অনেকেই হয়তো পড়েছেন কিন্তু কেউ কেউ যদি না পড়ে থাকেন? তাছাড়া নিজের ভাষায় পড়তে তো ইচ্ছা করে। তাই অনুবাদ করতে বসে গেলাম। সুধীগণ নিজগুণে ক্ষমা করবেন যদি এই দুর্বল কলমে ভালো না আসে, তবে যথাসাধ্য যত্নে কাজটুকু করার চেষ্টা ছিলো। ]
শেষ প্রশ্নটি প্রথম করা হয়েছিল [আরো পড়ুন]
Read More
ঋকথ
ঋ গোলকের পঞ্চবিংশতি কক্ষে বসে ফাইবার কাঁচের স্বচ্ছ ছাতের মধ্যে দিয়ে রাতের তারা ভরা উজ্জ্বল আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিল। মাথার উপরের এই বিস্তীর্ণ দিগন্তের কোন এক কোনে অদৃশ্য প্রায় ওদের জন্মস্থান। মহাকাশ থেকে যাকে দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। অপরূপ নীলচে সবুজ রঙ সেই গ্রহের। ঋ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। তারা বিজ্ঞানের অগ্রগতি আর নিজেদের ভোগসুখ চরিতার্থ [আরো পড়ুন]
Read More
নয়নবাবুর আয়না
নয়ন হাজরার বয়স বছর পঞ্চাশেক। একটু নাদুস নুদুস চেহারা। হাইট ৫ ফুট ৪ ইঞ্চির কম বই বেশি হবে না। পোশাকে আশাকে সৌখিন বলা যায়। চোখে রিমলেস সোনার চশমা। নয়নবাবুর বাবার রঙের দোকান ছিল বৌবাজারে। দোকানটা আর উত্তর কোলকাতায় একটা দোতলা বাড়ি নয়নবাবু উত্তরাধিকার সূত্রে পান। নয়ন বাবু ব্যবসার আরো উন্নতি করেন। এখন কলকাতায় চারটি দোকান ছাড়াও [আরো পড়ুন]
Read More
ডক্টর বিন্দু ও ফসিল রহস্য
স্বনামধন্য বৈজ্ঞানিক ডক্টর অর্কদেব বিন্দুর কথা তো সবাই জানেন । লম্বা, ছিপছিপে, সৌম্য মানুষটি, একমাথা চুলে রূপোর ঝিলিক, নিখুঁত শেভ করা মুখ আর সোনালী ফ্রেমের চশমার আড়ালে দুটি বুদ্ধিদীপ্ত চোখ । তাঁর এই চেহারা এখন মিডিয়ার দৌলতে বিশ্বের অনেকের কাছেই পরিচিত । এমনকি পরিচিত তাঁর অসামান্য কিছু আবিষ্কারের কথাও, যা শুধু ভারত বা এশিয়া নয়, এই সীমায়িত [আরো পড়ুন]
Read More
দেবযন্ত্র
দেবী কল্যাণময়ীর কথা
সিপাই বিদ্রোহের তিন বছর পর, অর্থাৎ ১৮৬০ খৃস্টাব্দের এই ঘটনা। সেদিন ছিল মহাষষ্ঠী, দেবী দুর্গার বোধন। হুগলী জেলার অবিনাশপুর গ্রামের জমিদার রামকিঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় সকালবেলা গঙ্গাস্নান সেরে বাড়ি ফিরছিলেন। পাকা রাস্তা তখনও তৈরি হয়নি, জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে পথ। যেতে যেতে হঠাৎ এক অভূতপূর্ব দৃশ্য রামকিঙ্কর বিস্ময়ে স্তব্ধ করে দেয়। আকাশ [আরো পড়ুন]
Read More
হরেনবাবু ও ব্ল্যাকহোল
হরেনবাবুর আজকে দিনটা বড়োই খারাপ যাচ্ছে। অবশ্য প্রত্যেকটা দিনই তাঁর বেশ খারাপ যায়, সেটা নতুন কিছু নয়, কিন্তু আজকের দিনটা একটু বেশিরকমই খারাপ। সকালে উঠেই কাজের লোক অ্যাবসেন্ট। ওদিকে গিন্নির কোমরের ব্যথাটা আবার তাক বুঝে বেড়ে উঠেছে। কাজেই ঘুম ভেঙে উঠে প্রথমেই একগাদা বাসন মাজতে হল। তারপর মেয়েটাকে ইশকুলে দিয়ে এসে মাছের ঝোলভাত রেঁধে রেখে [আরো পড়ুন]
Read More
প্রমোদ কন্যা
গাছ নিয়ে আমি গবেষণা করি না— কিন্তু গাছেদের আমি ভালবাসি।
ছেলেবেলা থেকেই গাছেরা আমাকে টানে। পাতা আর ডাল দুলিয়ে দুলিয়ে যেন আমাকে ডাকে। ওরা তো কথা বলতে জানে না। কিন্তু আমার বেশ মনে আছে, ওরা যেন কথাই বলত আমার সঙ্গে। সেই কথা কিন্তু একদিক থেকে আসত না— সবদিক থেকে যেন হাওয়ায় ভেসে ভেসে একই কথা নানা সুরে নেচেনেচে আমার দুকানে ঢুকে যেত। আমি তখন এতই ছোট্ট যে [আরো পড়ুন]
Read More