শোণিতরাঙা শ্বেতগোলাপ
এমনিতেও ‘দূরদর্শী’ হিসেবে খুব একটা সুনাম নেই আমার, তার উপর আবার ধূসর কুয়াশার পুরু আস্তরণটা বেশিদূর অবধি দেখার পথে অন্তরায় হচ্ছে! মাথার মধ্যে অদ্ভুত একটা ঝিমধরা ভাব। মাথাটা একটু ভার হয়ে আছে ঠিকই, কিন্তু মাদকতা’টুকু বেশ উপভোগ্য। কানের কাছে অনেকগুলো মৌমাছি যেন মৃদু একটা গুঞ্জন তুলছে অবিরত। নাহ! একটু ভুল হল, ঠিক কানের কাছে নয়। বরং বলা [আরো পড়ুন]
Read More
মরণের মুখে রেখে
মানুষ চায় অনেক কিছু; কিছু পায়, কিছু পায় না; কেউ পায়, কেউ পায় না। কালিদাস বিদ্যা চেয়েছিল, পেয়েওছিল; রাধা কৃষ্ণকে চেয়েও পায়নি।
শুক্লাও পায়নি।
শুক্লা বসু, এম.এ. সেকেন্ড ইয়ার, সংস্কৃত। বয়স তেইশ।
বিকেল ফুরিয়ে আসছে। সূর্য ইতিমধ্যেই ডুবে গেছে দৃষ্টিসীমার ওপারে। বৈশাখের রিক্ত অপরাহ্ণে বাড়ি ফিরছে ক্লান্ত পাখির দল। ছাদের উপর দাঁড়িয়ে [আরো পড়ুন]
Read More
পাষাণী
“কোথায় নিয়ে যাচ্ছো? এই! এই যে! শুনতে পাচ্ছো না? তোমাকে বলছি! কোথায় নিয়ে যাচ্ছো আমাদের?”
একটা তীব্র রিনরিনে কণ্ঠস্বর দেওয়ালের গায়ে ধাক্কা খেয়ে খেয়ে ফিরে আসছিল। ঘুটঘুটে অন্ধকার এই সুড়ঙ্গ পথটা ভীষণ ঠাণ্ডা। বাইরের পৃথিবীর কোনও আওয়াজ এখানে কোনওদিন ঢুকেছে বলে মনে হয় না। শুধুমাত্র কয়েক জোড়া পায়ের মৃদু শব্দ আর অস্পষ্ট ফোঁপানি। [আরো পড়ুন]
Read More
সাদা জাহাজ
আমি বেসিল এলটন। আমি নর্থ পয়েন্টের বাতিঘরের বাতিওয়ালা। আমার আগে আমার বাবা, আমার ঠাকুর্দা সকলেই এইখানে বাতিওয়ালা ছিলেন। পাড় থেকে অনেকটা ভেতরে পিছল পাথরের বুকে ধূসর বাতিঘরটা একলা দাঁড়িয়ে থাকে। পাথরগুলো জোয়ার এলে জলে ডুবে যায়। ভাটার সময় নজরে পড়ে। বাতিঘরের পেছনে ছড়িয়ে থাকা সমুদ্রের বুকে সাত সাগরের তিন মাস্তুলের পালতোলা [আরো পড়ুন]
Read More
দেবদূত
প্রারম্ভিকা
বিশাল কালো প্রান্তরের মধ্যে অবস্থিত শহরটি। সেটাকে ঘিরে আছে বিশাল ধূসর দেয়াল। এক রাস্তা যোগ হয়েছে মূল ফটকের সঙ্গে। ফটকের দুই পাশে দুটো বেদি, এবং সেখানে দাঁড়িয়ে থাকে দুই মূর্তি। একটা সাদা শ্বেত পাথরের, আরেকটা কালো কষ্টি পাথর। একটা দেবদূতের, আরেকটা কালদূত। দুটো প্রকাশ করে শহরের সাম্যতা, সঙ্গে অস্তিত্ব।
কথিত আছে, যদি শহরের [আরো পড়ুন]
Read More
দ্রোহ
প্রারম্ভিকপর্ব
টার্টারাসের ধূলিময় প্রান্তর। আকাশ জুড়ে ঝুলে থাকা লোহিত নক্ষত্রের লালচে আলোয় লাল হয়ে থাকে ধুলোর গভীর স্তর। হাওয়ার সামান্য ঝাপটেই ধোঁয়ার মতন কুণ্ডলী পাকিয়ে উড়ে যায় চারপাশেট্যাঁকাঠের তক্তা ঠুকে বানানো এই হতশ্রী কুটিরের প্রতিটি আসবাবের ওপরেও ধুলোর প্রলেপ। ধুলো জমেছে [আরো পড়ুন]
Read More
অতিউল্কা
“মা আআআআআআ…….”
রবিবার। অন্তিমাদেবী বেশ জাঁক করে একটা সুস্বাদু প্রাতরাশ বানাচ্ছিলেন আজকে। নওরোজার চিৎকারে চমকে উঠে খুন্তী হাতেই মেয়ের ঘরের দিকে দৌড় দিলেন তিনি। আজকাল কী যেন হয়েছে নওরোজার। মাত্র ন–বছরের মেয়ে, ইতিমধ্যেই দুঃস্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে রোজ! রাতে ভালো করে ঘুমোতে পর্যন্ত পারে না সে, বারবার স্বপ্ন দেখে কাঁদতে কাঁদতে ছুটে আসে ‘বাবা–মা’র ঘরের মধ্যে।
Read More
ওসেনবোরো
বুড়োটা শালা অসুস্থ নাকি!
কথাটা বাসুর মনের মধ্যে ভেসে উঠেই হারিয়ে গেল। সামনে বসে থাকা বৃদ্ধের চোখেমুখে এক অসহায় ভয় আর আতঙ্ক খেলা করে বেড়াচ্ছে। এই ধরনের মুখচ্ছবির সঙ্গে বাসু যথেষ্ট পরিচিত। চোখের সামনে মৃত্যুকে দেখলে মানুষের মুখ চোখ এরকম হয়ে যায়। অনেক সময় বাসুকে দেখলেও… হবে নাই বা কেন? মৃত্যু আর ভয় নিয়েই তো তার [আরো পড়ুন]
Read More
লেটারবক্স
দুপুর দুটোর ট্রেনটা ধরে ভালোই করেছিল মৃদুল। একটা সম্পূর্ণ অচেনা জায়গায় দিনের আলো থাকতে থাকতে পৌঁছানোটাই বুদ্ধিমানের কাজ। গ্রামের নাম শিউরিয়া। ভারী অদ্ভুত নাম। শুনলেই কেমন যেন শিউলি ফুলের কথা মনে পড়ে। মৃদুল অবশ্য নামটা প্রথম শুনেছিল একজন পোস্টম্যান-এর কাছে।
দিনটা ছিল মঙ্গলবার। অফিস থেকে ফেরার পথে মানিকতলা মোড়ে একটা বিশ্রী জ্যাম-এ [আরো পড়ুন]
Read More
বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস
“আচ্ছা, আজকে কি ঝড় আসবে?”
“এই আপনি কে বলুনতো? সেদিন থেকে ফোন করে করে এই একই প্রশ্ন করে চলেছেন! ইয়ার্কি হচ্ছে? মজা পেয়েছেন নাকি?”
কথাটা বলেই, কান থেকে ফোনটা প্রায় আছাড় মেরে নামিয়ে রাখতে গেলেন গৌরাঙ্গ, কিন্তু রিসিভারটা ক্রেড্লে না বসে, হাত ফসকে সোজা গিয়ে লাগল টেলিফোনের পাশে শোকেসের ওপরে রাখা ইন্দ্র এবং পুলমার বাঁধানো একটি ছবিতে; ফল- ছত্রভঙ্গ। কিছুক্ষণ [আরো পড়ুন]
Read More
ক্লাউন – আতংক
ঊনত্রিংশ শতাব্দী। ক্লাউনরাই এখন জগৎ শাসন করে। পৃথিবী বর্জন করেছে টেকনোক্রেসিকে। টেকনোক্রেসিই এই পৃথিবীতে মারাত্মক সব প্রাণঘাতী অস্ত্রের জন্ম দিয়েছে যা একসময় এই পৃথিবীকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছিল। দুনিয়া আজ তাই দুটো সমান্তরাল ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। এর একটা অংশ শাসন করে কিং ক্লাউন আর অন্যটা রেক্স করিডন। কিং ক্লাউন তাঁর প্রাণোচ্ছল স্বভাবের জন্য পরিচিত। [আরো পড়ুন]
Read More
প্রতিবিম্ব
১
নতুন বাড়িটা বেশ ভালো লেগে গেল অভয়ের। অভয় একজন পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, ও এই শহরে এসেছে ওর পি.এইচ.ডি কমপ্লিট করতে। ইউনিভার্সিটির হোস্টেলে জায়গা না পাওয়ায় ও শেষ পর্যন্ত এই বাড়িটা ভাড়া নিতে বাধ্য হল। বাড়িওয়ালা ভদ্রলোক সুধীনবাবু বেশ অমায়িক। নিজে রিটায়ার্ড মানুষ, বাড়িতে বউ আর ছেলে;ছেলে চাকরি করে। ভদ্রলোক বেশ রসিক লোক, গল্প গুজব করতে খুব ভালোবাসেন। [আরো পড়ুন]
Read More
পিঁপড়ে
পিঁপড়ে
লেখক – অদ্রীশ বর্ধন
অলংকরণ – তৃষা আঢ্য
পিঁপড়ে, শুধু পিঁপড়ে। মস্ত হলঘরের যেদিকে তাকানো যায়, কেবলই পিঁপড়ে। রঙীন পিঁপড়ে—বিরঙ পিঁপড়ে, রাক্ষুসে পিঁপড়ে—লিলিপুট পিঁপড়ে, নিরামিষপ্রিয় পিঁপড়ে—আমিষলোভী পিঁপড়ে, বিষাক্ত পিঁপড়ে—নির্বিষ পিঁপড়ে। কাচের শোকেসে পিঁপড়ে, তারের খাঁচায় পিঁপড়ে, জলঘেরা দ্বীপে বন্দী পিঁপড়ে, [আরো পড়ুন]
Read More
হুয়ানের বইটা
কুয়াশায় চারদিক জড়িয়ে থাকলেও সকাল সকাল প্লেন ধরবার তাড়া ছিল। ঘুম থেকে উঠেই তৈরী হয়ে ছুটলাম। ঘুম চোখেই এয়ারপোর্টের তিন নম্বর টার্মিনালের গেট ঠেলে ঢোকবার আগে মনে হল পুরো জায়গাটা আবছা সাদা পর্দায় কেউ ঢেকে দিয়েছে। গেটে আইডেন্টিটি চেক-এর পর ঢুকে পড়লাম ভেতরে। সিকিওরিটি চেক, লাগেজ ফাগেজের ঝামেলা মিটিয়ে লাউঞ্জের দিকে এগোতে থাকলাম। এখন একটা কড়া কফি চাই। ঘুম ঘুম ভাবটা কাটাতে হবে।
Read More
ভীনগ্রহের স্বর্ণঝঞ্ঝা
রাত বারোটায় আহারের পর ছাদে ঘুরে বেড়ানো টঙ্কার অনেকদিনের অভ্যাস। আজও তার ব্যতিক্রম হয় নি।
‘সত্যি, দাদু কলকাতা ছেড়ে এই ফ্যাচাংপুরে বাড়ি না করলে এইরকম প্রাকৃতিক পরিবেশ কোথাও পেতাম?’ মনের আনন্দে আপনমনে বলে উঠলেন ফ্যাচাংপুরের বিখ্যাত পাটের ব্যবসায়ী টঙ্কা, মানে টঙ্কেশ্বর গুপ্ত! আসলে এই টঙ্কেশ্বর নামেরও একটা ইতিহাস আছে।
‘নাতি [আরো পড়ুন]
Read More
সরীসৃপ
টিকি হয়তো আর বেঁচে নেই৷ কাল রাতে বাবা ঘরে স্প্রে করেছিল, সকালে যখন মা আমায় খাটে বসিয়ে চেঞ্জ করাচ্ছে, তখনই দেখতে পাই, আরশোলা [আরো পড়ুন]
Read More
অসুরক্ষিত – সাইমন রিচ
এক কারখানায় আমার জন্ম হয়। তারপর প্লাস্টিকের র্যাপারে মুড়ে বাক্সে সিল করা হয় আমাদের, একবাক্সে তিনজন করে।
প্রথমদিকে আমাদের জায়গা পাল্টায়। কারখানা থেকে গুদামঘরে, সেই গুদাম থেকে ট্রাকে চাপিয়ে তারপর দোকানঘরে।
একদিন এক তরুণ মানবের নজরে পড়ি। সে খপ করে আমাদের তুলে নিয়ে তার শার্টের নীচে লুকোয়। এবং এরপর সে খুব তাড়াতাড়ি দোকানের বাইরে চলে যায়।
বাড়িতে [আরো পড়ুন]
Read More