পাষাণী
“কোথায় নিয়ে যাচ্ছো? এই! এই যে! শুনতে পাচ্ছো না? তোমাকে বলছি! কোথায় নিয়ে যাচ্ছো আমাদের?”
একটা তীব্র রিনরিনে কণ্ঠস্বর দেওয়ালের গায়ে ধাক্কা খেয়ে খেয়ে ফিরে আসছিল। ঘুটঘুটে অন্ধকার এই সুড়ঙ্গ পথটা ভীষণ ঠাণ্ডা। বাইরের পৃথিবীর কোনও আওয়াজ এখানে কোনওদিন ঢুকেছে বলে মনে হয় না। শুধুমাত্র কয়েক জোড়া পায়ের মৃদু শব্দ আর অস্পষ্ট ফোঁপানি। [আরো পড়ুন]
Read More
হাতি
“নাঃ! সহ্যের একটা শেষ আছে। আর এই মেসে থাকা যাবে না।”
“আমিও মেস ছেড়ে দেব ভাবছি।”
“তুই ভাবছিস? আমি তো ঠিকই করে ফেলেছি।”
“আমি তো একটা মেসের ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে এসেছি। আর ক-দিন পরে সামনের মাসে একটা সিট খালি হচ্ছে। কালই অগ্রিম টাকাটা দিয়ে আসব।”
ওপরের কথাবার্তা যে বাহাত্তর নম্বর বনমালি নস্কর লেনের মেসবাড়ির দোতলার আড্ডাঘরে চলছে [আরো পড়ুন]
Read More
কোন সে কবির ছন্দ বাজে
জন্মান্তর আছে কিনা জানি না, কিন্তু এ কথা নিশ্চিত জানি, ওই মেয়েটিকে আমি চিনি। কোথায় তাকে দেখেছি, কিছুতেই মনে করতে পারছি না। কিন্তু ওকে আমি চিনি, চিনি, চিনি। ওই চোখের দৃষ্টি, ওই ভ্রূভঙ্গি, ওই ঠিকরে পড়া আলোর ঝলক— ও আমি নিশ্চিত কোথাও দেখেছি আগে। হয়তো এই জন্মে, হয়তো গতজন্মে— যদি গতজন্ম বলে সত্যিই কিছু থাকে।
স্বপ্নে সে এসেছিল আমার কাছে। প্রায়ই [আরো পড়ুন]
Read More
ঈশ্বরের গণিত
অধ্যায় এক
১৭ এপ্রিল, ২০৬৪ স্যাটেলাইট গ্রাউন্ড স্টেশন; ইউএস, ক্যালিফোর্নিয়া
“এমিলি, কফি খাবে?” পেছনের সারি থেকে বলে ওঠে মাইক।
“একটু পর, একটা মজার জিনিস পেয়েছি। চাইলে তুমি একা খেয়ে আসতে পারো, আসার সময় আমার জন্যে এক কাপ নিয়ে এসো।”
এমিলি, নতুন জয়েন করেছে এই ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্রের জুনিয়র পর্যবেক্ষক হিসাবে। নতুন নতুন সবারই এমন উৎসাহ উদ্দীপনা একটু [আরো পড়ুন]
Read More
কৃত্রিম
ক্যাফেতে পৌঁছে একটু এদিক ওদিক তাকাতেই মেয়েটিকে দেখতে পেয়ে গেলেন আসিফা। যতটা কমবয়সি মনে হয়েছিল ফোনে, ততটা নয়। অন্তত তিরিশ বছর বয়স তো হবেই। চেহারায় কোনও চটক নেই, তবে দেখতে সুশ্রী। ওঁকে দেখে উঠে দাঁড়িয়ে হাত বাড়িয়ে দিল জ্যোতি। হ্যান্ডশেকের পর ছোট্ট টেবিলটার দুদিকের চেয়ার দখল করল দুজনে।
ভালো করে জ্যোতির দিকে তাকিয়ে দেখলেন আসিফা। রোগা ছিপছিপে [আরো পড়ুন]
Read More
বিধুশেখর
সুমন্তবাবুর মন খারাপ। আজ বিকেলে বাস থেকে নামতে গিয়ে পড়ে গেলেন। চোট খুব একটা লাগেনি। কিন্তু বুঝতে পারছেন একটু সাবধানে চলাফেরা করা দরকার। সুমন্তবাবু থাকেন বেহালা চৌরাস্তার কাছে। আজকাল এখানে রাস্তায় চলাফেরা করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। একই রাস্তায় মানুষ, সাইকেল, বাস, রিকশা, অটো নিয়ে নিত্য যানজট লেগেই আছে। বাড়ি ফেরার সময় মনে মনে ভাবতে থাকলেন, পড়ে গেলেন [আরো পড়ুন]
Read More
পুনরাগমনায় চ
সকালবেলা। এভার ঘুম ভেঙে গেল। গুহার ঠিক বাইরে জ্বালা আগুনটা ভোরের দিকে নিভে গিয়েছে। হাড় কাঁপানো ঠান্ডা। ভাল্লুকের মোটা চামড়াটা ভালো করে গায়ে জড়িয়ে নিল এভা। তার বেশ মনে পড়ে ছোটবেলায় বেশ কয়েক চাঁদ ধরে এত গরম পড়ত যে ওই দূরের পাহাড়টাও গায়ের বরফের সাদা চাদর খুলে ফেলত। সে সময় এভারও খালি গায়ে ঘুরতেও কোনও কষ্টই হত না। কিন্তু এখন সারাক্ষণই কনকনে ঠান্ডা। মাঝে মাঝে আকাশ থেকেও বরফ পড়ে।
Read More
ম্যাজিক বাক্স
(এই কাহিনি সম্পূর্ণ কাল্পনিক। কোনও ব্যক্তি বা ঘটনার সঙ্গে কোনওরকম মিল একেবারেই আকস্মিক বলে ধরতে হবে।)
(১)
“এই ছেলের জন্য একদিন আমাদের গুষ্টি-সুদ্ধ জেলে যেতে হবে। একে নিয়ে যে আমি কী করি!”
“এখন আক্ষেপ করে লাভ কি বল? ওর ছোটবেলা থেকে তোমাকে আমি বার বার বলেছি, যে ছেলেকে সময় দাও। কিন্তু তুমি তোমার কোর্ট আর …”
“ছেলেকে সময় দিলে যে পেটের ভাত জুটত না সে কথা খেয়াল আছে?”
Read More
তারামাছ
তারামাছ
লেখক – ত্রিদিবেন্দ্র নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়
অলংকরণ – সৌরভ দে
(১)
স্থানঃ মাদ্রাজ
সময়ঃ ১৯৬০ সালের ২১শে জানুয়ারি।
“আপনার বিনয় দেখে আমি ভুলছি না স্যার। যাই বলুন আপনি স্যার একজন মহান বিজ্ঞানী।” মাধবন এই নিয়ে বোধহয় পনেরবারের মতো কথাটা বলল। বিক্রমের বিরক্তি ক্রমশঃ বাড়ছিল। এই লোকগুলো কী নির্লজ্জের মতো তোয়াজ করতে পারে। গত পরশু ও মাদ্রাজে এসেছে। [আরো পড়ুন]
Read More
বুদ্ধির্যস্য
বুদ্ধির্যস্য
লেখক – ঋজু গাঙ্গুলী
অলংকরণ – সৌরভ দে
“দেড় হাজার বছর!” আপ্রাণ চেষ্টা করেও নিজের গলা থেকে রাগ আর হতাশা সরিয়ে রাখতে পারছিলেন না হেম। “দেড় হাজার বছর ধরে চলছে পরীক্ষাটা। সবেমাত্র সেটা কিছু সত্যিকারের ফলাফল দিতে শুরু করেছে। তখনই সেটা এভাবে থামিয়ে দেওয়া যায় না। আপনি এরকম কিছু করতে পারেন না কম্যান্ডার!”
“যায়।” শক্ত গলায় বলেন গোরাম। “এবং আমি পারি।”
Read More
মহাকাশযাত্রী বাঙালী
ঘটনার অদ্ভূত যোগাযোগ জীবনে কখনো কখনো আশ্চর্যভাবে দেখা যায়। সকালবেলা কটা বৈজ্ঞানিক পত্রিকা ডাকে এসেছে। তন্ময় হয়ে তারই কয়েকটা নিবন্ধ ও আলোচনা পড়ছিলাম। মার্কিন একটি পত্রিকায় ‘কোয়াসার’ সম্বন্ধে অত্যন্ত চমৎকার একটি আলোচনা বেরিয়েছে। সেটি শেষ করে আরো দুটি পত্রিকার কোন নিবন্ধটি আগে পড়ব তাই নিয়ে তখন দ্বিধায় পড়েছি। একটি নিবন্ধ অ্যান্টিম্যাটার [আরো পড়ুন]
Read More
টিট্টিভ
কর্মে তীব্র অনীহাই শশিশেখরের কাল হইল।
সেই হেতু তিনি তাঁহার রোবট, শ্রীমান তড়িৎ তর্পণ তান্ত্রিকের হাতে কর্মভার সমর্পণ করিয়া, আত্মানন্দে বশীভূত হইয়া স্থির রহিলেন। তড়িৎ তর্পণ তান্ত্রিক বা টিটিটি, অর্থাৎ আমি নাটবল্টু ও প্লাস্টিক লোহার সমাহারমাত্র নহি। আমি পুরাদস্তুর প্রোগ্রামায়িত। আমার ভিতরে যুগ যুগ ধরিয়া শশিশেখরের বিদ্যা বুদ্ধি সব সমাহৃত।
আর শশিশেখর আপাতত [আরো পড়ুন]
Read More
গ্রহণে স্মরণে
মানুষের যদি কোন একটা গুণ থাকে, অনেক সময়ে দেখা যায় তার প্রভাব তাঁর সমস্ত কাজের ওপরেই পড়ে। ধরুন কেউ যদি নিখুঁত কাজ করতে ভালবাসেন, দেখা যাবে তাঁর হাতের লেখা থেকে শুরু করে, ঘর গুছানো, সবেতেই একটা পরিপাটি কাজের ছাপ থেকে যায়।
অদ্রীশ বর্ধনের ব্যাপারে সেইরকম একটা গুণের যদি খোঁজ করি, যার প্রভাব তাঁর জীবনের সর্বত্র ছাপ ফেলেছে, তাহলে একটাই কথা মাথায় আসে।
সাহসিকতা।
Read More
এক কল্পবিজ্ঞানীর কথা
সেদিন বিকেলবেলা জানালার পাশে বসে আছি। দেখি এক ঝাঁক পাখি আকাশ জুড়ে শ্রেণীবদ্ধ ভাবে উড়ে চলেছে। আমার দেখতে বেশ লাগলো। এমন করে ওরা একবার শীতের আগে উড়ে আসে, আবার শীতের শেষে। ওদের সাথে সাথে গোধুলির আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকলে আমার চোখে কেমন রেশ লেগে যায়। তখন পুরনো অনেক কথা ছায়াছবির মত চোখের সামনে ভেসে ওঠে। হয়ত এরকম সবার সাথেই ঘটে, বয়স বাড়ার সাথে সাথে।
Read More
সেইসব অমূল্য স্মৃতি
ছোটবেলা থেকেই তুমুলভাবে গল্পের বই। বিষয় বাছাবাছি নেই। একদিকে বাঁটুল দি গ্রেট তো অন্যদিকে চাঁদের পাহাড়। এই শ্রীকান্ত, তো তার পাশে টোয়েন্টি থাউজ্যান্ড লীগ্স। তবে যে সমস্ত অনুবাদ গল্পের বই পড়েছি, তার মধ্যে চূড়ান্তভাবে আচ্ছন্ন করেছেন কোনান ডয়েল। অবশ্যই আসলে তাঁর শার্লক হোমস। আর এই শার্লক হোমসের অনেকরকম অনুবাদ পড়তে পড়তেই অকস্মাৎ একদিন হাতে এল কোনও এক শার্লক হোমস অমনিবাস।
Read More
আমার চোখে অদ্রীশ বর্ধন
আমি তখন আমেরিকার শিকাগোয়। খুব সম্ভবত ২০০৬ সালের অক্টোবর। একদিন হঠাৎ পত্রভারতীর দপ্তর থেকে ত্রিদিবদার ফোন। অদ্রীশ বর্ধন আমার সঙ্গে কথা বলতে চান। উনি আমার লেখা প্রসঙ্গে ত্রিদিবদাকে ওঁর মুগ্ধতা জানিয়েছেন এবং সে প্রসঙ্গে আমার সঙ্গে কথা বলতে খুব আগ্রহী।
এটা যে সময়ের কথা সে সময় আমি কিশোর ভারতীতে বিজ্ঞানের [আরো পড়ুন]
Read More